ইলন মাস্ক মালিকানাধীন কোম্পানি নিউরালিংকের দাবি, তাদের ব্রেইন চিপ বসানো প্রথম রোগী চিন্তাক্ষমতা ব্যবহার করে প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে ভিডিও গেইম খেলেছেন।
সম্প্রতি কোম্পানিটি তাদের নিউরালিংক চিপ বসানো রোগীদের ‘প্রাইম স্টাডি’র প্রথম ১০০ দিনের বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছে।
নিউরালিংক বলছে, প্যারালাইজড বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তারা একটি ব্রেইন চিপ বসান, এবং এর ফলে কেবল চিন্তার মাধ্যমেই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তারা।
ব্রেইন চিপ বসানো রোগীদের অগ্রগতির বিষয়ে বুধবার কোম্পানিটি জানিয়েছে, নিউরালিংকের ব্রেইন চিপ বসানো লোকেরা গবেষণা সেশনের তুলনায় অবসর সময়ে এটি ব্যবহার করে বেশি সময় কাটান।
এক গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ২৯ বছর বয়সী নোল্যান্ড আরবাঘ। পরবর্তীতে তার কাঁধের নিচের অংশ প্যারালাইজড হয়ে যায় ও চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিজের মস্তিষ্কে নিউরালিংকের চিপ বসানোর সুযোগ পান তিনি।
আরবাঘ বলেছেন, ‘সিভিলাইজেশন ৬’ ও ‘মারিও কার্ট’-এর মতো অনলাইন ভিডিও গেইম খেলতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন তিনি।
এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ, বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে চ্যাটিং ও নিজের গেইমিং সেশনগুলো লাইভ স্ট্রিম করতেও সক্ষম হয়েছিলেন আরবাঘ।
“এটি বিলাসীতার মাত্রাতিরিক্ত বোঝার মতো। আমি গত আট বছরে এ ধরনের কাজ করতে পারিনি। আর এখন, আমি জানি না যে এটি আমার মনোযোগ কোথায় নিয়ে যাবে।”
নিউরালিঙ্ক চিপ বসানোর আগে মুখের মধ্যে ধরে রাখা একটি ট্যাবলেট স্টাইলাস বা লেখনী ব্যবহার করতেন আরবাঘ, যেটি কম্পিউটার পরিচালনা করার জন্য একজন কেয়ারগিভার বা পরিচর্যাকারীর মাধ্যমে ধরে রাখা হত।
তবে, নিউরালিংকের এ নতুন ব্রেইন চিপ প্রযুক্তি একেবারে নিখুঁত নয়। এটি শুধু খাড়া বা সোজাভাবে ব্যবহার করা যায় এবং এটি ব্যবহারের ফলে পেশীতে ক্লান্তি, চাপজনিত প্রভাব ও অন্যান্য অস্বস্তি হতে পারে।
এদিকে নিউরালিংক চিপ ব্যবহার করে আরবাঘ বলেছিলেন, বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেও এটি ব্যবহার করতে পেরেছেন তিনি।
“পৃথিবী, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ করতে আমাকে সাহায্য করেছে নিউরালিঙ্ক ব্রেইন চিপ৷ যে কোনো সময় পরিবারের কারো প্রয়োজন ছাড়াই এটি আবার আমাকে নিজে থেকে কিছু করার সক্ষমতা দিয়েছে।”
নিউরালিংকের দাবি, ভবিষ্যতে ব্রেইন চিপ বসানো ব্যক্তিরা ‘বাড়তি সক্ষমতা’ পেতে পারেন। যেমন– সত্য-মিথ্যা বোঝার মতো জ্ঞান বা মস্তিষ্কে সরাসরি গান শোনানোর সক্ষমতা।
এর আগে মাস্ক বলেছিলেন, অন্ধত্ব নিরাময় ও তাৎক্ষণিকভাবে নতুন ভাষা শিখতেও সাহায্য করবে নিউরালিংক ব্রেইন চিপ।
তবে নিউরালিংকের চূড়ান্ত লক্ষ্য, মানুষের ক্ষমতাকে এমনভাবে বাড়ানো যাতে তারা উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে বলে প্রতিবেদন লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।