দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে রাজধানীরবাজারগুলোতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজিসহ প্রায় সব পণ্য। তবে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা কমেছে। এদিকে মাত্র একসপ্তাহ পরেই কোরবানি ঈদ। ফলে চাহিদা তেমন না থাকায় মুরগির দামও কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। প্রতি কেজি মুরগির দাম ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমেছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে সবজি, মাছসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি থাকলেও কমেছে মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে মুরগির দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুটা কমে যায়। এ সময়ে চাহিদা কম থাকায় মুরগির দাম কমতির দিকে থাকে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমেছে। ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা; দেশি মুরগি প্রতি পিস ৪২০ টাকা থেকে ৪৪০ টাকা; পাকিস্তানি লাল মুরগি ৩০ টাকা কমে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ঈদুল ফিতরের পর জুলাই মাসের প্রথম দিকে মুরগীর দাম কিছুটা বাড়ে। তখন ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছিল ১৮০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। এছাড়া দেশি মুরগি প্রতি পিস ৪৫০ টাকা; পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা কমে আজকের বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা; আমদানি করা পেঁয়াজ ৫ টাকা কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা দরে।
তবে বাজারের এই দামের সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্য তালিকার দামে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে। টিসিবির মূল্য তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ব্রয়লাল মুরগী কেজি প্রতি ১২৫ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা এবং দেশি মুরগী ৩৭০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা; আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা।
এদিকে কাঁচামরিচ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আজকের বাজারে কাঁচামরিচ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। এছাড়া কেজি প্রতি দেশি রসুন ১১০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় রসুন ১৩০ টাকা, আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা দরে।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বেগুন। আজকের বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা দরে। এছাড়া সব ধরনের সবজির দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা হরে বেড়েছে। শিম ১৪০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা; দেশি টমেটো ১০০ টাকা; শশা ৬০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা; পটল ৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৬০ টাকা; ঝিঙ্গা ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা ৫৫-৬০ টাকা; করলা ৬০ টাকা; কাকরোল ৫৫ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৬০ টাকা; আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা; বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা; পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা; লালশাক ২০ টাকা; পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। আজকের বাজারে কেজি প্রতি ছোলা ৮৫ টাকা; দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা; দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আজকের বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা; প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪২-৪৩ টাকা, পারিজা চাল ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৫ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৩ টাকা, বিআর-২৮ ৪৮-৫০ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫০ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫২ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা, কাটারিভোগ ৭২-৭৩ টাকা এবং পোলাও চাল (পুরাতন) ১০০ টাকা, (নতুন) ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে সব মাছের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি রুই মাছ ২৮০-৪০০ টাকা, সরপুঁটি ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১০০০ টাকা।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ণ্টা, ২৫ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি