আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠান ফিচ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ঋণমানকে \’বিবি মাইনাস\’ অভিহিত করেছে। \’বিবি মাইনাস\’ রেটিং-এর মানে হলো দেশি ও আন্তর্জাতিক মুদ্রায় ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা স্থিতিশীল। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েব সাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে রবিবার ফিচের পক্ষ থেকে এ তথ্য দেওয়া হয়।
এর আগেও একাদিকবার বাংলাদেশকে এ মান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ফিচের এই ঋণমান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে চলমান করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ঋণদাতারা ঋণের ঝুঁকি কতটা তা বুঝতে পারে এই ঋণমান থেকে। কোনো দেশের ঋণমান কমে গেলে ঋণদাতারা ঋণের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচের প্রতিবেদনে উল্লেখিত বেশিরভাগ শেষ দিকের। এতে স্থিতিশীল ঋণমানের অন্যতম কারণ হিসেবে ভালো জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং স্বস্তি দায়ক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া বৃহৎ ও তরুণ জনসংখ্যার দেশ হিসেবে তুলনামূলক কম মজুরি দিয়ে কাজ করানোর সুযোগ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সময় মতো ঋণ পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।
খারাপ দিকের অন্যতম হিসেবে দুর্বল ব্যাংক খাতের কথা উঠে এসেছে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতে সুশাসনের ঘাটতির কারণে নানা কেলেঙ্কারি এবং উচ্চ খেলাপি ঋণের কথা তুলে ধরা হয়েছে। আর ব্যবসায়িক পরিবেশের দুর্বল অবস্থা, রাজনৈতি ঝুঁকির কথা উঠে এসেছে। এছাড়া রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ধীর গতি, রাজস্ব আদায়ে খারাপ অবস্থার কারণে বাজেট ঘাটতিসহ নানা দুর্বলতা তুলে ধরেছে সংস্থাটি।
সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্র ৮ দশমিক ১০ শতাংশ ধরা হলেও ফিচ পূর্বাভাস দিয়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর আগামী অর্থবছর তা ৭ দশমিক ২০ শতাংশ হবে। যদিও করোনা ভাইরাসের প্রভাবের ফলে বাংলাদেশ বাংক মনে করে চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১২ শতাংশের মতো অর্জিত হতে পারে।
প্রতিবেদনে গতবছরের নভেম্বরের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তথ্য উল্লেখ করে এটিকে স্বস্তিদায়ক বলা হয়। তখন রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।