রিপাবলিকানদের সমর্থন ছাড়াই অবশেষে করোনা স্টিমুলাস তথা ‘আমেরিকা উদ্ধার’ বিল পাস হয় মার্কিন কংগ্রেসে। সিনেটের ডেমোক্র্যাটদের ভোটে পাসের পর ১০ মার্চ তা হাউজেরও অনুমোদন পেল।
১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের এই স্টিমুলাস প্যাকেজ হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অংকের রিলিফ বিল এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি হচ্ছে প্রথম একটি সাফল্য। যা দুর্দশাগ্রস্ত আমেরিকানদের মধ্যে স্বস্তি এনেছে।
এই বিলে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করবেন ১২ মার্চ শুক্রবার এবং তারপরই বার্ষিক ৮০ হাজার ডলারের কম আয়কারী (দম্পতির ক্ষেত্রে এক লাখ ৬০ হাজার ডলার) আমেরিকানরা পাবেন ১৪০০ ডলারের চেক। এ মাসেই চেক সরাসরি পৌঁছে যাবে সকলের কাছে।
এছাড়া, করোনাকালীন বেকার ভাতার মেয়াদ বাড়বে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর পরিমাণ সপ্তাহে ৩০০ ডলার। সাথে থাকবে নিজ নিজ স্টেটের বেকার ভাতা। চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট বাড়বে ৫ বছরের কম বয়সী প্রতি শিশুর জন্যে বার্ষিক ৩৬০০ ডলার এবং ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীর জন্যে বার্ষিক ৩০০০ ডলার করে। এছাড়া, করোনা ভাতার জন্যে একেক জন ট্যাক্স ক্রেডিট পাবেন ১০২০০ ডলার করে। ভাতা গ্রহণের সময়েই যারা ট্যাক্স দিয়েছেন, তাদেরকে হিস্যা অনুযায়ী অর্থ ফেরত দেবে আইআরএস।
উল্লেখ্য, বেকার ভাতার মেয়াদ ১৪ মার্চ শেষ হবে। এই প্যাকেজের পরিপ্রেক্ষিতে তা ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ভাড়ার জন্যে উচ্ছেদ স্থগিতাদেশও জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়বে। এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। মর্গেজের জন্যে ব্যাংকগুলোর তাগিদও স্থগিত হবে। স্কুলের জন্যে ১৩০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। হাসপাতাল, সিটি, স্টেট প্রশাসনের জন্যেও ৩৫০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে এই প্যাকেজে।
রেস্টুরেন্ট এবং বারের জন্যে ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াও রয়েছে পল্লী এলাকার হাসপাতালের জন্যে ৮ বিলিয়ন ডলার। করোনা ভ্যাকসিন দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্যে ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াও গরিব দেশে করোনা টিকার জন্যেও বরাদ্দ রয়েছে। ফুডস্ট্যাম্পের বরাদ্দও বাড়ানো হয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর খাতও সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে কাগজপত্রহীনরা স্টিমুলাস চেক পাবেন না। বেকার ভাতাও পাচ্ছেন না। অথচ ডেমোক্র্যাটদের বড় একটি অঙ্গিকার ছিল এসব করার। এমনকি, ন্যূনতম মজুরি ঘন্টা ১৫ ডলারের বিধিটিও বাদ দিতে হয়েছে রিপাবলিকানদের চাপে।
প্রতিনিধি পরিষদে ২২০-২১১ ভোটে এই প্যাকেজ পাস হয়েছে। করোনাকালে গত বছর আরো তিনটি স্টিমুলাস পাশ হয়েছে ট্রাম্প আমলে। এই বিল পাস করা কঠিন হতো যদি সিনেট ও হাউজে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেত। এই প্যাকেজের পরিপ্রেক্ষিতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসীও উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই বিলের প্রতি ৭৬% আমেরিকানের সাপোর্ট ছিল। অবশিষ্ট ২৪% এর সিংহভাগই ট্রাম্পের সমর্থক, কট্টর রিপাবলিকান।