ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার অংশের র্যাম্প (নামার রাস্তা) খুলে দেওয়া হয়েছে যেটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সংলগ্ন।
আজ বুধবার (২০ মার্চ) ) সকাল ১১টায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার অংশে নামার র্যাম্প পরিদর্শনের পর এটি খুলে দেয়া হয়।
উদ্বোধনের আগে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর আগে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়েছিল। আজ কারওয়ান বাজার র্যাম্প খুলে দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশবাসীর জন্য ঈদ উপহার।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প এই বছরের মধ্যে শেষ হবে না। সামনের বছর শুরুতে পুরোটা খুলে দিতে পারব। এরপর হাতিরঝিলের র্যাম্প খুলে দেওয়া হবে। সেভাবেই কাজ চলছে।
ঢাকায় রমজান মাসে যানজট বাড়ে এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, রমজানে মানুষ ঈদ ভারাক্রান্ত হয়। শপিংমলে যায়। যানজট একটু থাকবেই। তবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত তো যানজট হচ্ছে না। মানুষ কম সময়ে যাচ্ছে। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আছে। আস্তে আস্তে ঠিক হবে। একসঙ্গে তো সব হবে না।
চুক্তি অনুসারে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ বাবদ সাড়ে একুশ বছর টোল আদায় করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এরপর বুঝে নেবে বাংলাদেশ সরকার। তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী অংশের কাজ এগিয়েছে ৭২ শতাংশের বেশি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দক্ষিণে কাওলা-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ হ্রাস পাবে। সার্বিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজিকরণ, আধুনিকায়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জিডিপিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এর আগে, গত বছর ২ সেপ্টেম্বর এই মেগা প্রকল্পের আংশিক ভাগ উদ্বোধন করা হয়। আর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে যান চলাচল শুরু হয়। বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খুলে দেওয়া হয়। এই অংশে ১৫টি র্যাম্প হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, তাদের এখন পর্যন্ত ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ অংশে কাজ চলছে। এখানে সোনারগাঁও হোটেলের পাশে একটা ওঠার র্যাম্প হবে।
ট্রাফিক বিভাগ বলছে, কারওয়ান বাজার র্যাম্প খুলে দিলে গাড়ির চাপ বাড়বে। এখন ফার্মগেট ও ইন্দিরা রোডে গাড়ির চাপ রয়েছে। মতিঝিল ও দক্ষিণ অংশের গাড়ি তখন এই র্যাম্প ব্যবহার করবে। কারওয়ান বাজার খুলে দিলে ওই অংশের চাপটা এদিকে চলে আসবে।
মূল এলিভেটেড অংশের দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কি.মি.। প্রকল্পে যানবাহন উঠা-নামার জন্য মোট ২৭ কি.মি দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কি.মি.।
জানা যায়, প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয় ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বাকিটা দেবে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ, চীন শ্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল গ্রুপ ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন ১৫ শতাংশ।