বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন স্বতঃস্ফূর্ত জননেতা ছিলেন উল্লেখ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বতঃস্ফূর্ত জননেতা হতে পেরেছিলেন এবং সর্বসাধারণ একাগ্রচিত্তে তাকে নেতা হিসাবে মেনে নিয়েছিল।
বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪-তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। গত রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার একটি হোটেলে আয়োজিত হয় এই আলোচনা অনুষ্ঠানের।
এসময়, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অকাল মৃত্যু না হলে এই উপমহাদেশে রাজনীতির ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখা হতো বলেও জানিয়েছেন দেশটির এই মন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ দুইটি অভিন্ন শব্দ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে আলোচনার কোন মানে হয় না। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ সমার্থক শব্দ।’
এদিন আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ সকালে হাই কমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে সহকারী হাই কমিশনার তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক সূত্রে গাঁথা। শত বছরের শোষণ, নিপীড়ন, বঞ্চনা ও পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে তিনি পথহারা বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। সহকারী হাই কমিশনার বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক ও মানবিক গুণগুলো শিশুদের মধ্যে প্রোথিত করে সুন্দর আগামী প্রজন্ম গড়ে তোলার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য শাহিদুল হাসান খোকন বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি তিনি ১৯৬৯ সালে পেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকেই মানুষ আগে থেকেই নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছিলো। শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হত না। বঙ্গবন্ধুর অকাল প্রয়াণে বাঙ্গালী জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর উপর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবি নজরুল ইসলাম এর একটা বিরাট প্রভাব ছিল। তাই কবিগুরু লেখা “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি” গান তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাই বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে আজকের বাঙ্গালীদের অনেক শেখার আছে।
অন্যান্যের মধ্যে ত্রিপুরার শিক্ষাবিদ ড. মোস্তফা কামাল, মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত সাংবাদিক ও লেখক স্বপন ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিতে কেক কাটা, কবিতা, প্রবন্ধ ও গানের মধ্য দিয়ে জাতির পিতাকে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সহকারী হাই কমিশনের পক্ষ থেকে শিশু-কিশোরদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পরে অতিথিবৃন্দ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।