মিয়ানমারের দক্ষিণ রাখাইন রাজ্যের উপকূলে চীনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলঘেঁষা দ্বীপ শহর রামারির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি জানিয়েছে, সোমবার শহরটি ছেড়ে পালিয়েছে জান্তা সৈন্যরা। গুরুত্বপূর্ণ শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রায় তিন মাস ধরে যুদ্ধ করেছে আরাকান আর্মিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, কাইউকফিউ শহরের সঙ্গে একটি দ্বীপের অংশ আছে রামারি শহরের।
এই এলাকায় চীন ও জান্তা সরকারের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছে কিউকফিউ গভীর সমুদ্রবন্দর। এটি চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেটি ভারত মহাসাগরে নেপিডোকে ইউনান প্রদেশের (চীন) সঙ্গে যুক্ত করেছে।
ইরাবতি জানায়, গেল কয়েক মাসে কাইউকফিউ শহরে নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়েছিল জান্তার সৈন্যরা। কিন্তু নৌ ও স্থলভাগে তাদের কোনো প্রতিরোধই টিকতে পারেনি আরাকান আর্মির সামনে।
গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে রামারি শহরে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তা অনেক হাসপাতাল, বিপণিবিতান, স্কুল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। আরাকান আর্মি বলছে, পালিয়ে যাওয়ার আগে জান্তা সৈন্যরা বিভিন্ন স্থানে মাইন বোমা পুঁতে রেখেছে।
এ কারণে স্থানীয়দের নিজ বাড়িতে বিলম্বে ফেরার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি আরও বলছে, পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু হিসেবে তারা রাথেডাং শহরে জান্তা ব্যাটালিয়ন সদর দফতর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। যদিও গত অক্টোবরে বিদ্রোহীরা একযোগে আক্রমণ শুরু করে। হারাচ্ছে একের পর এক সেনা ঘাঁটি।
গত বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮০টি দুর্গ ও নয়টি শহর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এই অবস্থায় রাখাইন রাজ্যে জোর করে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ শুরু করেছে জান্তা সরকার।