অমর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে ভাষা শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাবে সকল স্তরের বাঙালি জাতি। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় এরইমধ্যে কার্যকর করেছে র্যাব ও পুলিশ।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে আসা প্রতিজনকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পার হতে হবে। শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকলেও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব ও পুলিশ।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় নজরদারি করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে ডিএমপি। এছাড়া, শহীদ মিনারের প্রত্যেকটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো থাকবে। আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে আসাদের তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করতে হবে। শহীদ মিনারে চার স্তরে নিরাপত্তাসহ ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন থাকবে বোম ডিসপোজাল, সোয়াত টিম, টহল দল, ড্রোন ও সাইবার পেট্রোলিং।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
হাবিবুর রহমান বলেন, এই মুহুূর্তে আমাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তারপরও পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তা হুমকি বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে ক্যামেরার মাধ্যমে সব ধরনের সিকিউরিটি ইকুইপমেন্ট এবং সিকিউরিটি ইউনিট সেখানে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে পুলিশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। ঢাকা শহরের মানুষ এদিকে আসবেন সেজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সমগ্র এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকবে। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম, সোয়াত টিম, ফায়ার সার্ভিস ও মেডিকেল টিমসহ অন্যান্য টিম নিরাপদ দূরত্বে স্ট্যান্ডবাই থাকবে। শহীদ মিনার এলাকায় সার্বক্ষণিক তল্লাশি ব্যবস্থা এবং পেট্রলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ড্রোন পেট্রলিং, মোবাইল পেট্রলিং এবং সাইবার পেট্রলিং এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, র্যাব সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার ফেব্রুয়ারি থেকে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে ঢাকাসহ সারা দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে র্যাবের সাদা পোশাকধারী সদস্যরা গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রয়োজনীয় সুইপিং করবে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো ধরনের থ্রেট নেই। তবে আমরা সার্বক্ষণিক যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি বলেন, যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। র্যাবের হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হবে।