অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তি আজ

মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে ঠিক একশ\’ বছর আগে এসেছিল \’অক্টোবর বিপ্লব\’। উনবিংশ শতাব্দীতে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন কার্ল মার্ক্স-ফ্রেডেরিখ অ্যাঙ্গেলস। সেই মতাদর্শ ধারণ করে ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিনের পরিচালনায় ও বলশেভিক পার্টির (কমিউনিস্ট পার্টির) নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে, পুরোনো জুলিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসারে ২৫ অক্টোবর আর নতুন গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসারে ৭ নভেম্বর রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল।

\’অক্টোবর বিপ্লব\’ সভ্যতার ইতিহাসে এক অসামান্য ঘটনা। এই বিপ্লব হিটলারের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ থেকে বিশ্বসভ্যতাকে বাঁচিয়েছে। ১৯১৭ সালের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্যই ছিল পুঁজিবাদের ক্রমবর্ধমান দুঃসহ দৌরাত্ম্যকে প্রতিহত করে একটি মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলা। এই বিপ্লবের অনেকগুলো তাৎপর্যের মধ্যে অন্যতম এর আন্তর্জাতিকতা, সম্পদের পুঁজিবাদী মালিকানার জায়গায় সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং মুনাফার আত্মকেন্দ্রিকতাকে হটিয়ে মনুষ্যত্বের সহমর্মিতার ও সহযোগিতার জগৎ প্রতিষ্ঠা ও বৈজ্ঞানিকতা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে \’অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ\’। এ উপলক্ষে গত ৬ অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শুরু হয় মাসব্যাপী কর্মসূচি। ৭ নভেম্বর (মঙ্গলবার) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিলের মাধ্যমে শেষ হবে \’অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন\’ কর্মসূচির।

গত ৪ অক্টোবর এ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে সিপিবি-বাসদসহ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ১২টি রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত \’অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটি\’। রাজধানীর পুরানা পল্টন মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

মাসব্যাপী অন্যান্য কর্মসূচি: ১১ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্র সংগঠনগুলোর উদ্যোগে \’সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েতের অভিজ্ঞতায় সর্বজনের শিক্ষা\’ শীর্ষক সেমিনার, ১৩ অক্টোবর মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে প্রগতিশীল নারী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে \’রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ও নারী মুক্তি আন্দোলন: তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা\’ বিষয়ক সেমিনার, ১৯ অক্টোবর মুক্তিভবনে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলোর উদ্যোগে \’শতবর্ষে অক্টোবর বিপ্লব: কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির বিপ্লব পুনর্গঠন\’ শীর্ষক সেমিনার এবং ২০ অক্টোবর আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে হয় শ্রমিক সমাবেশ।২৮, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর প্রতিদিন বিকেল ৪টায় পাবলিক লাইব্রেরির সেমিনার কক্ষে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র সংগঠনগুলোর উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ ও শোভাযাত্রা; ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সাংস্কৃতিক, চলচ্চিত্র ও শিশু-কিশোর সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা, গান, নাটক, আবৃত্তি, নৃত্য, শিশু-কিশোর চিত্রাংকন, আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ০৭  নভেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি

Scroll to Top