স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের যে পথনাথ তৈরি করেছেন সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার অপরিহার্য।
তিনি বলেন, শক্তিশালী স্থানীয় সরকার বলতে শুধুমাত্র বাজেট বা টাকা পয়সা দিয়ে সহায়তা বুঝায় না, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করা কেউ বুঝায়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করে সে ধরনের অবস্থানে নিয়ে যাওয়াই সরকারের লক্ষ্য।
আজ শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত \’স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান সম্ভব\’ শীর্ষক এক পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহি এবং তাদের কাজের মূল্যায়নের ওপরও জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, \’ঢালাওভাবে জনপ্রতিনিধিদের খারাপ বলা উচিত নয়। অনেক জনপ্রতিনিধি নানা ধরনের ভালো কাজ করছেন। তাদের সে ভালো কাজের মূল্যায়নও সমাজে প্রয়োজন। শিক্ষিত তরুণ সমাজের রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন। তা নাহলে অযোগ্য লোক সমাজকে নেতৃত্ব দেবে।\’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় অবকাঠামো রাতারাতি তৈরি করা সম্ভব হলেও মানুষের চিন্তা চেতনার জগতে রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয় উল্লেখ করে বলেন, \’স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের চিন্তা-ভাবনাও স্মার্ট হতে হবে।\’
সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, \’সাধারণত দুর্নীতি বলতে আমরা আর্থিক দুর্নীতিটাকেই বেশি বুঝে থাকি কিন্তু নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করাও অনেক বড় দুর্নীতি। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে গেলে স্মার্ট জনপ্রতিনিধি এবং স্মার্ট জনগণ দুটোই লাগবে। জনপ্রতিনিধি ও জনগণ তাদের নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেই দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করা সম্ভব।\’
উন্নত বিশ্বের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, \’কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকার কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। আইন দ্বারা এই দুই ব্যবস্থার কাজের পরিধি সুনির্দিষ্ট ভাবে ভাগ করা রয়েছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে স্থানীয় সরকার তাদের নিজেদের কাজ সঠিকভাবে করছে কিনা, তাদের রাজস্ব আয়ের নানা ধরনের উপায় সৃষ্টি করতে পারছে কিনা এবং স্থানীয় মানুষকে তাদের সমস্যার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারছে কিনা। স্থানীয় সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার সবাই মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।\’
দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, \’দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোন সমস্যা নেই। দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন করার সুযোগ পাবে। তবে এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষ তৈরি হতে পারে।\’
স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণে এই ছায়া সংসদে সরকারি দল হিসেবে বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি ও বিরোধী দল হিসেবে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন।