একদিকে সরকার হাজারো কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধের কাজ করছে, অন্যদিকে প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ভাঙন সৃষ্টি করছে। সবকিছু দেখেও প্রশাসন চুপ। ভোলা জেলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরা। উপজেলাটি এমনিতেই অবহেলিত। বর্তমানে সেখানে যে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে তা নিয়েও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, উপজেলাটিতে মনে হচ্ছে চলছে আলাদা কোন নিয়ম বা আইন। তাইতো যে যার মত করে অনিয়মকেই নিয়মে পরিনত করেছে। উপজেলাটির উত্তর মাথায় রামনেওয়াজ নামক মেঘনার পাড়ের ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড-২। বর্তমানে প্রায় ১১শত কোটি টাকার ভাঙ্গন রোধের জন্য জিও ব্যাগ ডাম্পিং, সিসি ব্লকসহ একটি প্যাকজ কাজ চলছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর দ্বাযিত্বশীল কর্মকর্তা জানান।
অথচ অপরপ্রান্তের দক্ষিনে সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার পাশের নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে মনপুরার বাংলাবাজার এলাকার পাশে বনের ভিতর দিয়ে হেটে নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায় বালু উত্তোলনের জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা। ড্রেজার, বলগেটসহ সবকিছুই। পাইপ লাইন কয়েক কিলোমিটার টেনে বিভিন্ন জলাশয়, পুকুর কিংবা কৃষিজমি বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।
এসময় ড্রেজারের মিস্ত্রী ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মো: হিরন মিয়া ও স্টাফ মো: রুবেল এ সাথে কথা হয়। তারা জানালেন বিস্তারিত। স্থানীয় চেয়ারম্যানের লোক মো: মোসলেহ উদ্দিন এর নির্দেশে তারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। বলগেটের মাধ্যমে এনে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে নেয়া হচ্ছে এ বালু। গত ১৫দিন ধরে তারা বালু উত্তোলন করছেন বলে জানান।
স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ হলে (নিরাপত্তার কারনে নাম দেয়া হলো না) তারা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ও সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যন মো: জাকির হোসেন ক্ষমতাসিন দলের প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন করছে।
তবে এসব বিষয় অস্বিকার করে মো: জাকির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, \’ব্যক্তিগত দুটি পুকুর ভরাট করাতে বলেছি মাটি দিয়ে। বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।\’ যদিও বালু উত্তোলনের সাথে শাহজাহান মেম্বার এবং ইয়াসিন সর্দারও জড়িত রয়েছেন বলে বলগেটের স্টাফ জানান। তবে তাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ এর চেস্টা হরেও মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মো: মোসলেহ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, \’নদী থেকে বালু তুলে তারা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে।\’
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, \’কোথাও থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে কি না সেটা জানা নেই। কেউ বালু উত্তোলন করে থাকলে কোন ছাড় দেয়া হবে না।\’ এর পরেই সংবাদ প্রতিবেদক মোবাইলে ছবি দেখালে তিনি বলেন, \’ঠিক আছে খোঁজ নিচ্ছি।\’
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাসানুজ্জামান বলেন, \’নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ক্ষতিই করবে। তবে আমি লোক পাঠিয়ে দেখবো বাস্তবতা কি।\’