মসজিদ ভেঙে ফেলা ঠেকাতে গিয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ভারতে একটি মসজিদ ও মাদরাসা ভেঙে ফেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। খবর আল জাজিরা
ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যের হালদওয়ানি শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভবনগুলোকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছেন, মসজিদ এবং মাদরাসা অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়।
কিছুদিন আগেই ভারতের নয়াদিল্লিতে ভেঙে ফেলা হয়েছে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন একটি মসজিদ। ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার উত্তরাখণ্ডে একটি মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। আর তা সামনে আসতেই ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা, যাতে নিহত হয়েছেন ৫ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।
পুলিশ বলছে, মসজিদ ও মাদরাসা ভেঙে ফেলার সময় মুসলিমরা পুলিশের যানবাহন ভেঙে ফেলা এবং সদস্যদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে গুলি এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সহিংসতার জেরে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের হলদোয়ানিতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। এছাড়া স্কুল বন্ধের পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাটি সামনে আসার পর সহিংসতা শুরু হলে শহরটিতে কারফিউ জারি করা হয়। এছাড়া ‘দাঙ্গাকারীদের’ দেখামাত্র গুলি করার আদেশ জারি করা হয়েছে।
নৈনিতাল জেলার ম্যাজিস্ট্রেট বন্দনা সিং বলেন, এটিকে সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুসারে এগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। কারণ অনুমতি ছাড়াই এই মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, হালদওয়ানি বানফুলপুরের মসজিদ এবং মাদ্রাসাটি দুই যুগের পুরনো। এগুলো উদ্দেশ্য প্রণোদিভাবে ভেঙে পেলা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শুক্রবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, মসজিদ ভেঙে ফেলার সময় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় মুসলিমদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত হয়। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন আকঞ্জি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়। গত ৩০ জানুয়ারি মেহরাউলিতে অবস্থিত মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয় বলে জানায় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। আকঞ্জি মসজিদের তত্ত্বাবধানকারীদের মতে, মসজিদটি প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো।
মসজিদের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জাফর সেসময় এএফপিকে জানান, মসজিদটি রাতের অন্ধকারে ধ্বংস করা হয়েছে। এর আগে তারা কোনো নোটিশ পাননি। স্থানীয়দের দাবি, মসজিদটি রাজিয়া সুলতানার শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল, যা প্রায় ৬০০-৭০০ বছরের পুরনো।