বর্তমানে মিয়ানমারে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে চলছে ব্যাপক গোলাগুলি। মিয়ানমারের এই সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায়ও পড়ছে। তাই চলমান পরিস্থিতি পরিদর্শনে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তে যাচ্ছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধীনস্থ উখিয়ার পালংখালী বিওপি এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধীনস্থ হোয়াইক্যং বিওপি ও তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন তিনি। পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, \’মিয়ানমার সীমান্ত বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশটির ২৬৪ বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাসদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা ধৈর্য ধারণ করে মানবিক দিক থেকে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।\’
তিনি বলেন, \’সোমবার প্রধানমন্ত্রী এই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।\’
গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে ক্যুর মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে বাংলাদেশিসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এতে ঘটনাস্থলেই এক রোহিঙ্গা শ্রমিক (৫৫) নিহত হন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান হোসেন আরা। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার স্ত্রী। ওই রোহিঙ্গা ব্যক্তি ওই বাড়িতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করতেন। তার পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৬৪ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।