বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অংশে ব্যাপক গোলাগুলি ও বোমা বর্ষণ হচ্ছে। গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমা বর্ষণ চলছে। বেশ কয়েকটি গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে।
এদিকে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে প্রাণহানির শঙ্কায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ বিজিপির ১৪ জনেরও বেশি সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের ঘুমধুম বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ রোববার সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লাগাতার গুলি ও মর্টারশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুই সীমান্তের ৩৪ নং পিলারের ওপাড়ে মিয়ানমার অংশে জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।
সকালে একাত্তরের কাছে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গোলাগুলির মাঝে দিশেহারা হয়ে ১৪ জনের মতো মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্য বাংলাদেশ অংশে অনুপ্রবেশ করেছে।
এদিকে, গুলি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অংশে পড়লেও এতে কেউ হতাহত হয়নি। গোলাগুলির ঘটনায় পুরো সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান তারা।
শনিবার দুপুরে তুমব্রু সীমান্তের সড়কে চলাচলকারী আবু তাহেরের সিএনজি চালিত অটোরিকশায় একটি গুলি এসে লাগলে সামনের গ্লাসের একটি অংশ ভেঙে যায়। তবে চালক ওই সময় গাড়িতে না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া একটি মর্টারশেল এসে পড়ে তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার ইউনুছ ওরফে ভুলুর বাড়িতে। বাড়ির টিন ছিদ্র হয়ে মর্টারশেলটি ঘরের ভিতরে এসে পড়ে। তবে সেসময়ে পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়ি না থাকায় হতাহত হয়নি কেউই।
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৩৪ পিলার রাইট ক্যাম্প, ঢেঁকিবুনিয়া ক্যাম্প বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। ক্যাম্পগুলোর এপারের সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশি জনবসতি রয়েছে।
আরাকান আর্মি রাখাইনের অনেক ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে এবং এখন এই ক্যাম্পগুলোর দখল নিতে গোলাগুলি করলে তার অংশ এপারের সীমান্তে চলে এসে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের।