গত জানুয়ারির মাঝামাঝি মিয়ানমারের এক ক্যান্টনমেন্ট শহরে ছোটো একটি জনসভা হয়েছিল। দেশটির সেনাবাহিনীপন্থি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের অন্যতম নেতা পাউক কোতাও সেই সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
নিজ বক্তব্যে এই সন্ন্যাসী ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি যেন সরকারের উপপ্রধান জেনারেল সোয়ে মিনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেন। পাউক কোতাও এই আহ্বান জানানোর পর সমাবেশে উপস্থিত সবাই উল্লাসের সঙ্গে তাতে সমর্থন জানান। মিয়ানমারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনও কোতাও’র বক্তব্যের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তবে কেবল পাউক কোতাওই নন, বর্তমানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীপন্থি বেশিরভাগ সাংবাদিক, ব্লগার, ইউটিউবাররাও বিভিন্নভাবে বলছেন যে এখন সরকারপ্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত জেনারেল হ্লেইংয়ের।
অথচ কয়েক মাস আগেও জান্তাপন্থীদের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য কেবল অপ্রত্যাশিতই নয়, রীতিমতো অভূতপূর্ব ছিল। যার নেতৃত্বে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করল জান্তা, সেই মিন অং হ্লেইংকে তারই সমর্থকরা পদত্যাগের আহ্বান জানাবেন— এমনটা কল্পনাও করা যেত না। এখন চিত্রটি বদলে গেছে। কারণ গত কয়েক মাসে নাটকীয় উত্থান ঘটেছে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর এবং ইতোমধ্যে মিয়ানমারের ভূখণ্ডের উল্লেখযোগ্য অংশ এই গোষ্ঠীগুলোর দখলে চলে গেছে। দেশটির মিডিয়াগোষ্ঠী মিয়ানমার পিস মনিটর জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে অন্তত ৩৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।