বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকাশে ভারতের প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটেছে- এমন অভিযোগ মানতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চীন ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্ত করছে কানাডা- এমন প্রসঙ্গ উঠে আসে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এ সময় একজন সাংবাদিক তার কাছে প্রশ্ন রাখেন, মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে আটক রাজনৈতিক কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য শাসকগোষ্ঠী বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা, বিএনপি নেতাসহ ২৫ হাজার বিরোধীদলীয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
জবাবে মিলার বলেন, \’বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা আমাকে আগেও বলতে শুনেছেন। সেখানে আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু হতে দেখিনি। ওই নির্বাচনের প্রাক্কালে হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।\’
এ সময় তিনি বলেন, \’দুটো কথা বলবো। প্রথমত, গ্রেপ্তারকৃত সকল ব্যক্তির জন্য একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যম পেশাজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নাগরিক জীবনে অর্থবহভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দিন। আমরা এই দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবো।\’
সাংবাদিক তার কাছে আবার আরেকটি প্রশ্ন রাখেন, \’কানাডার একটি তদন্তে রাশিয়া ও চীনের পাশাপশি দেশটির নির্বাচনে ভারতের সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সঙ্গেও ভারতের সম্পৃক্ততা দেখা গেছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রকাশ্যে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা নির্বাচনের মতো তাদের বিজয়ের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। সমালোচকদের দাবি, ভারতীয় প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন?\’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, \’আপনি যে কানাডিয়ান তদন্তের কথা উল্লেখ করেছেন, সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এটা কানাডার কথা বলার বিষয়। বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলবো, গণতন্ত্র- যেমনটা আমরা বহুবার বলেছি বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে- শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রেখেছি, যা সকল বাংলাদেশির জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার চাবিকাঠি।\’