তুরস্কের প্রাচীন নগরী ইস্তাম্বুলের একটি গির্জায় এক প্রার্থনাসভায় একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুই বন্দুকধারীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা আইএসের (ইসলামিক স্টেট) সঙ্গে জড়িত।
আঙ্কারা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইয়েরলিকায়া বলেন, ইস্তাম্বুলের সারিয়ের জেলায় অবস্থিত ইতালির সান্তা মারিয়া ক্যাথলিক চার্চে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে এ হামলা চালানো হয়। প্রার্থনা সভায় অংশগ্রহণ কারার সময় এক তুর্কি নাগরিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়।
ইয়েরলিকায়া সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ ইস্তাম্বুলের ৩০টিরও বেশি স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪৭ জনকে আটক করে। অভিযানের শেষের দিকে সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, ‘সন্দেহভাজন দুজনই বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে একজন তাজিকিস্তানের এবং অপরজন রুশ। আমাদের ধারণা তাঁরা আইএসের সঙ্গে জড়িত।’ তাঁদের হামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে, টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। বিবৃতিতে বলা হয়, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু করতে দলটির নেতাদের নির্দেশে সাড়া দিয়ে এ হামলা করা হয়েছে।
গির্জার ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশধারী বন্দুকধারীরা ভবনের ভেতর প্রবেশ করছে এবং তাদের সামনে থাকা এক ব্যক্তিকে গুলি করছে। সিসিটিভি ফুটেজে গুলি করার পরই বন্দুকধারীদের বের হয়ে যেতে দেখা যায়। এ ঘটনায় গির্জার যাজককে সমবেদনা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
হামলার এ ঘটনায় সমবেদনা প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিসও। তিনি বলেছেন, ‘আমি ইস্তাম্বুলের সেন্ট মেরি ড্রেপারিস চার্চের সম্প্রদায়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি, যেখানে সমাবেশ চলাকালে সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছেন তাঁরা এবং একজন নিহত হয়েছেন।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এক্স প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) বলেন, ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ঘৃণ্য এ ঘটনার’ ওপর নজর রাখছে এবং এর নিন্দা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আইএস এ পর্যন্ত তুরস্কজুড়ে অসংখ্য হামলা চালিয়েছে। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ইস্তাম্বুলের একটি নাইট ক্লাবে হামলা চালায় এ সংগঠনটি। এতে ৩৯ জন নিহত হয়েছিল। ইয়েরলিকায়া বলেন, তুর্কি কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের জুন থেকে ১০৪৬টি অভিযানে আইএস সন্দেহে ২০৮৬ জনকে আটক করেছে এবং ৫২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।