ফিলিস্তিনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করার প্রচেষ্টা জোরদার করছে মালয়েশিয়া। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেয়ার পক্ষে লড়বে মালয়েশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।
মালয় মেইলের খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) মন্ত্রী পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। এই বিতর্কে ফিলিস্তিনের চলমান চ্যালেঞ্জসহ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
অধিবেশন চলাকালীন মোহাম্মদ হাসান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য মালয়েশিয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করবেন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির তীব্র বিরোধিতা করবেন এবং গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা বিতরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেবেন।
খবরে আরও বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে চাপ দেবে এবং মন্ত্রী জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হিসাবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দেবেন।
এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়া বলেছেে, \’এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ফিলিস্তিনি জনগণের নিরঙ্কুশ অধিকারের জন্য সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়া, যার মধ্যে তাদের নিজস্ব ভাগ্য, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব নির্ধারণের অধিকার রয়েছে। এটি দীর্ঘদিন ধরে অস্বীকার করা হয়েছে।\’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, \’স্বীকৃতিটি ১৯৬৭ এর পূর্ববর্তী সীমানার উপর ভিত্তি করে দিতে হবে। এতে পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী ছিল।\’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাতে মোহাম্মদ হাসান গাজায় মানবিক সহায়তা ত্বরান্বিত, নিরাপদে বিতরণ, ব্যাপকভাবে সমাধান এবং অবিচ্ছিন্নভাবে এবং নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা প্রদানে মালয়েশিয়ার সমর্থন প্রকাশ করবেন।
কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি ফিলিস্তিন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আইনি পদক্ষেপে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে মালয়েশিয়া।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া জানায় যে, ফিলিস্তিনকে সমর্থন করতে, গাজায় নৃশংসতা বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সব ধরনের উপায় ব্যবহার করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নতুন বছরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা বেড়েছে। অবরুদ্ধ উপত্যকায় দেশটির নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এই তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় নিহতের সংখ্যা ২৫ হাজার ১০৫ জন। পাশাপাশি আহত হয়েছে আরও ৬২ হাজার ৬৮১ জন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে। কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছতে পারছেন না।
ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকার বেশির ভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, এ যুদ্ধ সেখানকার ২৪ লাখ মানুষের জন্য মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাদাগাদি করে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এসব মানুষকে খাবার, পানি, জ্বালানি ও স্বাস্থ্যসেবা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নভেম্বরের শেষের দিকে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির অংশ হিসাবে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে হামাস ১০০ জনেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, হামাস এখনও ১৩৬ জনকে বন্দী করে রেখেছে।