পটুয়াখালীতে হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র

ব্যয়বহুল এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) থেকে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে হাঁটছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে পটুয়াখালির পায়রায় ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে জার্মানির কোম্পানি সিমেন্সের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। পায়রায় নির্মাণাধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হবে।

গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম এবং সিমেন্স দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীল মাথুর। এখন পর্যন্ত দেশে নির্মিত বা নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সবগুলোই ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। পায়রায় ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের এ কেন্দ্রটি নির্মাণ হলে এটি দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের মর্যাদা পাবে।

এমওইউতে উল্লেখ করা হয়, পটুয়াখালির ধানখালি এলাকায় ১০০ একর জমির উপর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২৩ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে জার্মানি দিবে ২৪০ কোটি ডলার, যা মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশ। আমদানিতব্য এলএনজি থেকে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। যৌথ মালিকানার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানা বাংলাদেশের এবং বাকি অর্ধেক জার্মান কোম্পানি সিমেন্সের। প্রকল্পের মূলধনী বিনিয়োগ ৪০ কোটি ডলারের অর্ধেক ২০ কোটি ডলার সংস্থান করবে এনডব্লিউপিজিসিএল।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এ প্রকল্পে ব্যবহৃতব্য মেশিনগুলোর জ্বালানি দক্ষতা ৬০ শতাংশ বেশি। পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজিভিত্তিক কেন্দ্রটি বড় ভূমিকা রাখবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এই প্রকল্পের অর্থায়ন ও ঋণ সহায়তা করবে জার্মানি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো ইউরোপীয় দেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ এটি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. টমাস প্রিনজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। এখন তারা মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হতে চলেছে। বাংলাদেশের এই উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন। বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিডিবি’র চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ এবং সিমেন্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবাল বোস।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ০৬  নভেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি

Scroll to Top