প্রতিবেশী ইরানের হামলায় পাকিস্তানে দুই শিশু নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার(১৬ জানুয়ারি) এই হামলার ঘটনা ঘটে। ইরান জানিয়েছে, তারা জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের দুটি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছিল। তবে পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ইরান বেআইনিভাবে এই কাজ করেছে, যার পরিণতি গুরুতর হতে পারে।
গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ইরাক ও সিরিয়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর একদিন পর পাকিস্তানে হামলা চালালো ইরান। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও প্রতিশোধ নেওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছে ইসলামাবাদ।
ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইরান নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে বেলুচিস্তানের জৈশ আল-আদল নামক উগ্রবাদী গ্রুপের দুটি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এটি ইরানে জৈশ আল-ধুম নামে পরিচিত। বেলুচিস্তানের কোহ-সবজ বা সবুজ পর্বত এলাকায় ছিল ঘাঁটি দুটি।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জাহরা বালুচ বলেন, পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইরানের এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে পাকিস্তান। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। এর পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের অনেক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের কাজ উদ্বেগ আরও বাড়াবে। পাকিস্তান এরই মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এছাড়া ইরানের শ্যাজ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
পাকিস্তানের ভেতরে ইরানের এ ধরনের হামলা নজিরবিহীন। যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে সেখানে দুই দেশের প্রায় ৯০০ কিলোমিটার (৫৫৯ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্ত উভয় দেশের কাছেই উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে। এ অঞ্চলে পাকিস্তান-ইরান উভয়েই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হামলার শিকার হয়। জৈশ আল-আদল নামের গ্রুপটি কয়েক দশক ধরে হালকা বসতিপূর্ণ এই অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে।
গত মাসে এই গ্রুপের হামলায় এক ডজনের বেশি ইরানি পুলিশ নিহত হয়েছিল। ইরান দাবি করেছিল, পাকিস্তান থেকে এসে সন্ত্রাসীরা হামলাটি চালিয়েছিল। ইউএস ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের মতে, জৈশ আল-আদল হলো সিস্তান-বেলুচিস্তানে সক্রিয় সবচেয়ে সক্রিয় ও প্রভাবশালী সুন্নি গ্রুপ।
সূত্র: আল জাজিরা, দি নিউজ, বিবিসি