মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, ‘তুমি তোমার কোনো (মুসলমান) ভাইকে মহব্বত করলে তার সঙ্গে ঝগড়া করবে না, তার ক্ষতি সাধনের চিন্তাও করবে না এবং তার কাছে কিছু চাইবেও না। এমন যেন না হয় যে তুমি শক্রর খপ্পরে পড়ে যাও এবং সে তোমাকে তার সম্পর্কে এমন কথা বলবে যা তার মধ্যে নেই। এভাবে সে তোমার ও তার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করবে। ’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৪৭)
আলোচ্য হাদিসে মুয়াজ (রা.) বন্ধুত্ব ও সদ্ভাব রক্ষার উপায় বর্ণনা করেছেন।তিনি এমন কিছু নীতির কথা বলেছেন যা অনুসরণ করলে বন্ধুত্ব স্থায়ী হয় এবং সম্পর্ক সুন্দর থাকে। তা হলো :
১. ঝগড়া না করা : ইসলাম সাধারণভাবেই ঝগড়া করতে নিষেধ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার পরে হিদায়াতপ্রাপ্ত লোক তখনই পথভ্রষ্ট হবে, যখন তারা ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হবে। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ): ‘বরং এরা তো এক বিতর্ককারী সম্প্রদায়। ’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৫৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪৮)
২. ক্ষতি না করা : এক বন্ধু অপর বন্ধুর ক্ষতি করবে না। এক মুমিন অপর মুমিনের ক্ষতি করবে না। মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)
৩. কোনো কিছু না চাওয়া : এখানে সাধারণ প্রয়োজন পূরণে সহযোগিতা চাওয়া উদ্দেশ্য নয়, বরং উদ্দেশ্য হলো বন্ধুরা পরস্পরের কাছে স্বার্থের সন্ধান করবে না।
তাদের সম্পর্ক থাকবে স্বার্থ চিন্তার ঊর্ধ্বে। কেননা মহানবী (সা.) বলেন, সর্বোত্তম মানুষ সেই যে মানুষের জন্য বেশি উপকারী। (মিজানুল ইতিদাল : ৩/২৪৮)
৪. আস্থা রাখা : বন্ধুত্বের অন্যতম প্রধান দাবি হলো বন্ধুকে বিশ্বাস করা এবং তার ওপর আস্থা রাখা। কেউ কোনো কিছু বললেই প্রমাণ ছাড়া বিশ্বাস না করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন তারা এটা শুনল, তখন মুমিন পুরুষ এবং মুমিন নারীরা আপন লোকদের সম্পর্কে কেন ভালো ধারণা করল না এবং বলল না, এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১২)
৫. সম্পর্ক ছিন্ন না করা : গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া বন্ধু অপর বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ হলো- তোমার সঙ্গে যে আত্মীয়তা ছিন্ন করেছে, তুমি তার সঙ্গে তা বজায় রাখো, তোমাকে যে বঞ্চিত করেছে, তুমি তাকে প্রদান করো এবং যে তোমার প্রতি অন্যায় আচরণ করেছে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৮০৭৯)
আল্লাহ সবাইকে সৎ বন্ধু লাভের তাওফিক দিন। আমিন।