জাতির সুখ-সমৃদ্ধি এবং সকল যুদ্ধের অবসান কামনা করে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার সারাদেশে খিস্টানধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধমীয় উত্সব বড়দিন উদযাপিত হয়েছে। ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উত্সবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোয় বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন।
বড়দিন উপলক্ষে সোমবার ছিলো সরকারি ছুটি।
সকাল ৭টায় শুরু হয়ে বড়দিনের প্রথম প্রার্থনা। এরপর সকাল ৯টায় শুরু হয় খ্রিস্টযোগ (বিশেষ প্রার্থনা)। দিনের শুরতেই প্রার্থনায় যোগ দিতে গির্জায় গির্জায় খিস্টান ধর্মালম্বীদের ঢল নামে। চার্চে সমবেত হন যীশুভক্তরা।
সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও মানব জাতির সুখশান্তি ও সত্য-ন্যায়ের পথে আহ্বানের বানীতে শুরু হয় প্রার্থনা।
এদিকে রবিবার রাতে বিভিন্ন গির্জা ও উপাসনালয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়। বড় হোটেলগুলোও বড় দিনে আলাদা আয়োজন করেছে।
শিশুদের জন্য ছিল নানা ধরনের খেলার আয়োজন। প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ‘সান্ত্মাক্লজ’ আসেন নানা উপহার ও চমক নিয়ে।
রাজধানীর কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রাল গির্জা, তেজগাঁওয়ের হলি রোজারিও চার্চে সাকল গান, মহাখালীর লুর্দের রানীর গির্জা, লক্ষ্মীবাজারের ক্রুশ ধর্মপলস্নী, মোহাম্মদপুরের সেন্ট ক্রিস্টিনা গির্জা, মিরপুর-২ এর মিরপুর ক্যাথলিক গির্জা, কাফরুলের সেন্ট লরেন্স চার্চগুলোতে সকালে প্রার্থনা শুরু হয়। এতে যোগ দেন খিস্টান ধর্মালম্বী নানা বয়সী মানুষ। যিশু খ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় প্রার্থনায়।
একই সঙ্গে সবার জন্য শান্তি ও আনন্দের বার্তা দেন তারা।
প্রার্থনা শেষে তারা জানান, যিশুর মহিমাকীর্তন এবং শান্তি ও ন্যায়ের কথা বলা হয়। দেশে এখন অর্থনেতিকভাবে কঠিন সময় পার করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ও দেশের সুখ শান্তি জন্য যীশুর কাছে প্রার্থনা করেছি।
যীশুভক্ত ক্রেইজা বলেন, ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে এই দিনটা উদযাপন করছি। যিশু খ্রিস্ট সমাজে শান্তি ও ক্ষমা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই জিনিসটা যেন আমরা নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে পারি। একজনের আরেকজনের প্রতি ক্ষমাশীল হতে পারি।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি কাটিয়ে সবাই যে একত্রিত হতে পেরেছি এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। ত্রাণকর্তা যেন আমাদের পাপ থেকে মুক্তি দিতে পারেন এটাই আজকে আমাদের চাওয়া।