প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ৩২তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৫তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্মিলিত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত করবে এসডিজি অর্জন’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে সরকার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ন্যায় বহুবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিবন্ধী ও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদানে দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় মোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় থেরাপিউটিক সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ৪৫টি ভ্রাম্যমাণ মোবাইল রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি ভ্যান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার পথ অবারিত করতে সারাদেশ ৭৪টি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও ১২টি স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে ঢাকার মিরপুরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স (সুবর্ণ ভবন) নির্মাণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুপ্রাণিত করতে প্রায় ৪৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা জেলার সাভারে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় আনা ও দেশের উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন, সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩ একাদশ জাতীয় সংসদের ২৫তম অধিবেশনে পাস হয়েছে। ফলে, একদিকে যেমন ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান থেকে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে সক্ষম হবো বলে আমি প্রত্যাশা করি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীদের সার্বিক উন্নয়নে আমি সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের জনগণ, সংশ্লিষ্ট সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোকে সমন্বিত ভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ৩২তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৫তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।