পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ভাঙচুর এবং অস্ত্র ছিনতাই মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও দলটির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রাজধানীর পল্টন থানায় হওয়া মামলার শুনানি শেষে সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১৯ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয় বিএনপি নেতা দুদু ও স্বপনকে। তবে স্বপনকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত দেখানো হয় কারাগার থেকে।
সেদিন শুনানি শেষে আদালত দুদু ও স্বপনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এছাড়া রিমান্ড শুনানির জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।
এর আগে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই বিএনপির দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের উসকানি ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা পল্টন থানাধীন পুলিশ ক্যান্টিনে ভাঙচুর করেন এবং পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ইটপাটকেল মেরে জাদুঘরের গ্লাস ভেঙে ক্ষতি সাধন করেন।
এছাড়া মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। চানমারী পুলিশ লাইন্সের ডিউটি পোস্টে অগ্নিসংযোগসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জানমালের নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে তাদের নিবৃত্ত করতে গেলে তিনদিক থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন এবং এএসআই এরশাদুল হককে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করে তার পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত ১ নভেম্বর খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন থানায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৪১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ তিন-চারশ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার পর গত ৫ নভেম্বর দিনগত রাত ১২টার দিকে ঢাকায় বোনের বাসা থেকে দুদুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গত ৬ নভেম্বর দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গত ৩ নভেম্বর স্বপনকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওইদিন শুনানি শেষে আদালত তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।