বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১০টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এসব আগুনের ঘটনা ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে একটি, নওগাঁয় একটি, কিশোরগঞ্জ একটি, খাগড়াছড়ি একটি, দিনাজপুর একটি, রাজশাহী একটি, নাটোর তিনটি ও সিলেটে একটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আগুনে পাঁচটি বাস, চারটি ট্রাক ও একটি কাভার্ড ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই আগুন নির্বাপণ করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৫ ইউনিট ও ৭৫ জন জনবল কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২৭ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ২১৮টি অগ্নিসংযোগের (কয়েকটি স্থাপনাসহ যানবাহনে) সংবাদ পেয়েছে তারা।
বিএনপির অবরোধ-হরতালের এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি।
ওই সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। আগুন, ভাঙচুর ও ককটেল ছোড়া হয়। পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক কনস্টেবলকে। এ ছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন আরও একজন।
এ অবস্থায় সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেন। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। অজ্ঞাত স্থান থেকে রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি দেন। বিএনপির অবরোধে একাত্মতা জানায় জামায়াতে ইসলামীও।
এর পর থেকে বিরতি দিয়ে দফায় দফায় অবরোধ-হরতালের ঘোষণা দিয়ে আসছে বিএনপি। দলীয় সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে দাবিতে এমন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে। তবে এর মাঝে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দিয়েছিল বিএনপি। সর্বশেষ ঘোষণা করা হয় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।
বিএনপির ডাকা অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপসহ নানা সহিংসতা হচ্ছে। কঠোর অবস্থানে থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে আতঙ্ক সঙ্গে করেই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।