মালদ্বীপ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নিতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। শপথ গ্রহণের এক দিন পর এমন আহ্বান জানালেন তিনি। গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা যায়।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গত শনিবার নিজ কার্যালয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ভূ-বিজ্ঞানবিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ভারতীয় ওই মন্ত্রী শুক্রবার মুইজ্জুর শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
মালদ্বীপের অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুক্রবার শপথ নেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত-সহ ৪৬টি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রাজধানীর রিপাবলিক স্কয়ারে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
মুইজ্জু এর আগে দেশটির রাজধানী মালের মেয়র ছিলেন। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গৃহায়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মুইজ্জুর পাশাপাশি হোসেন মোহাম্মদ লতিফও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।
তাদের শপথ পড়ান দেশটির প্রধান বিচারপতি আহমেদ মুথাসিম আদনান। এদিকে এক টুইটে মুইজ্জু মালদ্বীপের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে পরিণত করতে \”দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে\” কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এক মাসের বেশি সময় আগে অনুষ্ঠিত মালদ্বীপের নির্বাচনে কট্টর ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিহকে পরাজিত করেন মুইজ্জু। তার নির্বাচনী প্রচারণার মূল প্রতিশ্রুতিই ছিল ভারত মহাসাগরীয় এই দ্বীপদেশে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহারে নয়াদিল্লিকে বাধ্য করা।
দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধীদের প্রচারণার প্রধান স্লোগান হয়ে ওঠে ‘ইন্ডিয়া আউট’। আর এই স্লোগানের মাধ্যমে নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সোলিহকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেন বিরোধীরা।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সৈন্য প্রত্যাহার করে ভারতের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানালেও নয়াদিল্লি নীরব রয়েছে। এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপদেশে ভারতের প্রায় ৭০ জন সৈন্য রয়েছেন। এ ছাড়া দেশটিতে ভারতীয় কিছু রাডার এবং নজরদারি বিমান রয়েছে। মোহামেদ মুইজ্জুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল এই দ্বীপপুঞ্জ থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।