ইহুদিবাদী ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলাত শহর লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের নিক্ষিপ্ত একটি ক্ষেপণাস্ত্র সৌদি আরব ভূপাতিত করেছে বলে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল খবর দিয়েছে।
গত সপ্তাহের ওই ঘটনা সম্পর্কে প্রাথমিক খবরে বলা হয়েছিল, হুথিদের নিক্ষিপ্ত ইসরাইল অভিমুখী পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র লোহিত সাগরে মোতায়েন মার্কিন সেনারা গুলি করে নামিয়েছে। কিন্তু ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এখন বলছে, পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্রের চারটি মার্কিন সেনারা ভূপাতিত করলেও পঞ্চম ক্ষেপণাস্ত্রটি নামিয়েছে সৌদি আরব। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সৌদি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হুথিদের নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে দিচ্ছে।
রিয়াদ নিজের আকাশসীমা রক্ষা করার জন্য আমেরিকার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি প্যাট্রিয়ট আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনেছে এবং সেগুলোর কোনো একটি ব্যবহার করে ইসরাইল অভিমুখী ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের সরাসরি দূরত্ব প্রায় ২,২০০ কিলোমিটার এবং হুথি যোদ্ধারা ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে সেটিকে সৌদি আরব ও জর্দানের আকাশসীমা অতিক্রম করতে হয়।
ইসরাইলকে রক্ষায় সৌদি আরব, জর্দান ও মিশরের মধ্যে প্রতিযোগিতা
মানবতার শত্রু ইসরাইলকে রক্ষা করতে সৌদি আরবের পাশাপাশি অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে জর্দান ও মিশর। সম্প্রতি সিরিয়া থেকে ইসরাইলে নিক্ষিপ্ত বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করেছে জর্দান। এছাড়া, গত সপ্তাহে মিশরের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেন থেকে ইসরাইলে নিক্ষিপ্ত দু’টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এরকম একটি ড্রোন মিশরের তাবা এলাকায় বিধ্বস্ত হলে পাঁচ মিশরীয় নাগরিক আহত হয়।
ইরানের হুঁশিয়ারির পর ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হুথি যোদ্ধারা
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে ‘আল-আকসা তুফান’ অভিযান চালানোর পর থেকে ইহুদিবাদী সেনারা গাজা উপত্যকার আবাসিক অবস্থানগুলোতে নির্বিচারে পাশবিক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্থলপথে গাজায় অনুপ্রবেশ করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
ইরান ওই অনুপ্রবেশের আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, ইসরাইল গাজার নিরস্ত্র জনগণের ওপর হামলা বন্ধ না করলে কয়েকটি ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হবে তেল আবিব। এরপর স্থলপথে গাজায় ইসরাইলি ট্যাংক অনুপ্রবেশ করলে গত সপ্তাহে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলাত শহর লক্ষ্য করে অন্তত পাঁচটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী ড্রোন নিক্ষেপ করে ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারা। তবে সেগুলোর বেশিরভাগ ইসরাইলে পৌঁছার আগেই আমেরিকা ও সৌদি আরবের হামলায় আকাশেই ধ্বংস হয়ে যায়।
ইয়েমেনের হুথি নেতা আব্দুল মালিক আল-হুথি ঘোষণা করেছেন, দখলদার ও অবৈধ [ইসরাইলি] শত্রুদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের যুদ্ধ করার বৈধ অধিকার রয়েছে এবং আল-আকসা তুফান অভিযান সেই অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। তিনি চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় গিয়ে যুদ্ধ করার জন্য হাজার হাজার হুথি যোদ্ধা প্রস্তুত রয়েছে বলে ঘোষণা করে আব্দুল মালিক বলেন, সৌদি আরব হুথি যোদ্ধাদের গাজায় যেতে বাধা দিচ্ছে।