রিখটারসবেল্ট পর্বতমালায় হীরে তো দূর সামান্য সোনার রেণুর খোঁজ না পেয়েই হতাশ হয়েছিলেন অ্যালভারেজের বন্ধু জিম কার্টার। তবে অ্যালভারেজ কিন্তু হতাশ হননি।
জীবনের শেষ অবধি অভিযান চালিয়ে এক বঙ্গ কিশোরের চোখে তুলে ধরে ছিলেন এই ধরিত্রীর অমূল্য রতন।
রহস্য, রোমাঞ্চ এবং বিপদসঙ্কুল পরিবেশেই যে লুকিয়ে রয়েছে এই পৃথিবীর অধিকতর সম্পদ, তা শঙ্করও তার অভিজ্ঞতায় বুঝেছিলেন। অ্যালভারেজের মতো তিনিও ফের বেরিয়ে পড়েছিলেন চাঁদের পাহাড়ের খোঁজে। তবে, শঙ্করের মতো সোনা সন্ধানকারীরাও মনে করেন এই পৃথিবীর বেশিরভাগ সম্পদে এখনও আঁচড় পড়েনি মানুষের। আর সেই সম্পদের সিংহভাগই ঘুমিয়ে রয়েছে সমুদ্রের অতলান্তে। এমনটাই অন্তত দাবি সোনা সন্ধানকারীদের।
ফোর্বসের একটি প্রতিবেদনে ভূগবেষক ট্রেভর নেস জানান, সমুদ্রের অতলে লুকিয়ে রয়েছে ২ কোটি টন সোনা। তার মতে, আজকে সোনার যা বাজার দর তাতে (৪২.৫১ ডলার প্রতি গ্রাম) ওই সম্পদের মূল্য হবে আনুমানিক ৭৭১ লক্ষ কোটি ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যা জিডিপি, তার ৪১ গুন বেশি মূল্যের সম্পদ রয়েছে সেখানে।
উত্তরোত্তর এই মূল্য যে আকাশ ছোঁবে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, এই সম্পদ আদৌ মানুষের হাতে পৌঁছবে কি?
এই মুহূর্তে যে প্রক্রিয়ায় সমুদ্র থেকে সোনা উত্তোলন হয়, তাতে খরচ তেমন একটা নেই বরং লাভজনক। কিন্তু সমুদ্রের যে সব জায়গায় সোনা মজুত রয়েছে, সেখানে পৌঁছানো বিপুল ব্যয় সাপেক্ষ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৮৯০ সালে ফোর্ড জার্নেগান নামে এক যাজক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ড সাউন্ড থেকে সোনা উত্তোলনের জন্য অভিনব পরিকল্পনা করেছিলেন। পারদ এবং বিদ্যুতের সাহায্যে সোনা তোলার কথা ভেবেছিলেন তিনি। বিনিয়োগকারী জোগার করে ইলেকক্ট্রনিক মেরিন সল্টস নামে একটি সংস্থাও খোলেন তিনি। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের চোখের আড়ালে শুরু করে দেন সোনা উত্তোলনের কাজ। তবে, যখন বিনিয়োগকারীরা প্রশ্ন করতে শুরু করেন, তখন যাজক জার্নেগান টাকা পয়সা নিয়ে বেপাত্তা হয়ে যান। কিন্তু রয়ে গিয়েছিল জার্নেগানের তৈরি সেই সোনা উত্তোলক যন্ত্র। এরপর অনেকেই এসেছেন সমুদ্র থেকে সোনা উত্তোলন করতে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই স্বর্ণ গহ্বরে পৌঁছতে পারেনি মানুষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, সুবর্ণ সুযোগ এখনও অধরাই।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্টা, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে