তীক্ষ্ম নজর। শরীরে যেন তেল চিক চিক করছে। অপরিচিত কাউকে দেখলেই ফোঁস ফাঁস করে উঠছে। একমাত্র রিয়াজুল ব্যাপারীর ‘টাইগার’ ডাক পেলেই শান্ত হচ্ছে! এই ‘টাইগার’ সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার নয়। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর গাবতলীর গরুর হাটে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে নিয়ে আসা হয়েছে সুবিশাল নয়নাভিরাম টাইগার নামক গরুটিকে।
ব্যাপাইর রিয়াজুল ইসলাম বলেন, সম্পূর্ণ দেশিয় খাদ্যের মাধ্যমে টাইগারকে লালন পালন করা হয়েছে। কোন প্রকার হরমোন বা ওষুধ টাইগারের শরীরে নেই। তিনি বলেন, প্রায় ২১-২২ মণ মাংস হবে। এ গরু অষ্ট্রেলিয়ান প্রজাতির । মাংস খুবই সুস্বাদু হবে। এখন পর্যন্ত ৭ লাখ টাকা দাম তোলা হয়েছে। ক্রেতারা সাড়ে ৪ লাখ বলছে।
এদিকে ৭ লাখ টাকা দাম হাঁকা হয়েছে মাস্টার (কুষ্টিয়ার গরু) নামের একটি গরুর। সাদা-কালোর সংমিশ্রণে বিশাল দেহের মাস্টার নামক গরুটিকে দেখলেই মনে হবে যেন চোখ রাঙ্গাচ্ছে। গরুইটর মাইলক মো. রাজু ব্যাপারী কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে মাস্টারকে নিয়ে এসেছেন।
মো. রাজু ব্যাপারী বলেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রজাতির হলেও দেশিয়ভাবে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কয়েক দিন আগেই হাটে আনা হয়েছে মাস্টারকে । প্রায় ১৬-১৮ মণ মাংস হবে। ৭ লাখ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে। তবে ক্রেতারা ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাম বলছে।
ঝিনাইদহ থেকে লাল মিয়া নামক একটি গরুকে নিয়ে আসা জয়নাল বলেন, দুই লাল মিয়াকে নিয়ে আসতে গাড়িতে ৩৬ ঘণ্টা লেগেছে। বড় লাল মিয়া মারা গেছে। ছোট লাল মিয়াকে বাজারে এনেছি।
গরুটির দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, দাম সাড়ে ৬ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। মাংস হবে ১৮-১৯ মণ। দেশিয়ভাবে পালন করা লাল মিয়ার দাম কম হাঁকা হচ্ছে বলে জানালেন তিনি। যদি ভারতীয় গরু না আসে তাহলে এর কদরও বাড়বে।
কুষ্টিয়া থেকে ২৫টি দেশিয় গরু নিয়ে এসেছেন তৈয়ব আলী ব্যাপারী। তিনি জানান, ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত গরু রয়েছে তার কাছে। এসব গরু দেশিয়। তিনি আরো জানান, ভারতীয় গরু নাকি আসতেছে শুনতেছি। তবে ভারতীয় গরু আনতে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে দেশিয় গরু এর চেয়ে কম টাকায় পাওয়া যাবে।
তৈয়ব আলী ব্যাপারী বলেন, এবার এখনো বাজার জমেনি। আরও ২-৩ দিন পর ঈদ বাজার জমবে। এখন ক্রেতারা এসে দেখছেন, দাম জেনে যাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গরুর দাম দেখতে এসেছেন শাহজাহান মিয়া। তিনি বলেন, দেশিয় গরু দেখে পছন্দ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার গরু ভালো দেখা যাচ্ছে। তবে দাম বেশি।
গাবতলীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে এখনো গরুর বাজার জমে উঠেনি। গরু আসছে। আর যে সব ব্যাপারী গরু নিয়ে এসেছেন তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন। গরু ছাড়াও ছাগলের বাজারে কিছু ক্রেতা দেখা গেছে। গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে গরু, মহিষ, ভেড়া, উটের দাম কিছুটা বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ২৬ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি