দশ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশ এক নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। জঙ্গি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে জনতা পুলিশকে সহযোগিতা করেছে বলে মন্তব্য তাঁর। আগে গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় স্থানীয় মাতব্বরেরা যে সামাজিক কর্মকাণ্ড করতেন, সেটাই এখন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যরা করছেন বলে জানান মন্ত্রী।
আজ শনিবার সকালে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘জঙ্গি-মাদক প্রতিকারে জনতা পুলিশ এক কাতারে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) আছাদুজ্জামান মিয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে পুলিশের আট বিভাগ থেকে আটজন সদস্যকে ও বিট পুলিশিংয়ের কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এলাকায় যে সামাজিক ব্যবস্থা ছিল, সেটা কমে যাওয়ায় সন্ত্রাস বাড়ছে। সে জন্য আইজিপি কমিউনিটি পুলিশিং জোরদার ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কমিউনিটি পুলিশ জোরদার হলে সবাইকে নিরাপত্তা দেওয়া যাবে। ছোট ছোট বিরোধ উৎসের সময়ই শেষ করে দিতে পারলে থানায় আর মামলা করতে হবে না। এটাও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ। কারণ, থানায় একটা মামলা হলে বিচার পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়।
দুই দফায় ইতিমধ্যে ৮০ হাজার পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পুলিশকে অনেক সুবিধা দিতে পারেননি বলেও স্বীকারোক্তি তাঁর। এ বছর যথেষ্ট পরিমাণ গাড়ি ডিএমপির জন্য কেনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। পুলিশের অন্য সমস্যাগুলো দূর করার জন্য কাজ চলছে বলে জানান।
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং হলো জনগণের কাছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের জবাবদিহি করা। দেশের জনগণের সঙ্গে থানা-পুলিশের দূরত্ব কমলেই কমিউনিটি পুলিশিং সফল হবে। এতে জনগণের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। নাগরিক দায়িত্ব জাগিয়ে তোলা ও সংগঠিত করাই এর লক্ষ্য। পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে ভয় দূর হবে। পুলিশ ও কমিউনিটি বসে সমস্যা চিহ্নিত করবে এবং সমাধান করবে। সে ক্ষেত্রে ভালো লোক দিয়ে কমিউনিটি পুলিশের কমিউনিটি গঠন করতে হবে এবং ভালো লোক দিয়ে থানার ওসিদের এই সমস্যার মূল্যায়ন করতে হবে। এটা না করলে পারলে ওসি পদে থাকার অযোগ্যতা তৈরি হবে।
অপসংস্কৃতি নিবৃত্ত করাই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশ সক্রিয় হলে মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাস, ইভ টিজিং ও বাল্যবিবাহ থাকবে না। গুলশানে জঙ্গি হামলার পর যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, পুলিশ তা মোকাবিলা করেছে। একের পর এক অভিযান চালানো হয়। এতে কমিউনিটি পুলিশ আমাদের সঙ্গে ছিল।’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএমপি সদর দপ্তরের সামনে থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শোভাযাত্রা বের করেন। সেটি কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সারা দেশে আজ একযোগে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি