রোজার ত্রুটি বিচ্যুতির কাফফারা স্বরূপ ফিতরা। ঈদের নামাজের আগেই ফিতরা অসহায়দের দেয়া উত্তম। নবিজী বলেছেন, ঈদের আগে ফিতরা না দিলে রোজাদারের রোজা আসমান ও জমিনের মাঝে ঝুলে থাকে।’ তাই ঈদের নামাজের আগেই ফিতরা দেয়া জরুরি। কিন্তু জানেন কি, কত টাকা থাকলে দিতে হবে ফিতরা?
অনেকেরেই সাদকাতুল ফিতর সম্পর্কে ধারণা নেই। আবার অনেকেই জানে না যে, কতটাকা থাকলে ফিতরা দিতে হয়? সাদকাতুল ফিতর দেবেন কারা? কার ওপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব? আসুন জেনে নিই-
যে সম্পদের ফিতরা দিতে হয়
যে ব্যক্তির ওপর জাকাত ওয়াজিব তার ওপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করাও ওয়াজিব। তবে সাদকাতুল ফিতর আদায়ে ব্যতিক্রম হলো-
১. জাকাতের নেছাবের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাবপত্র ও ঘরের মূল্য ইত্যাদি হিসাবে ধরা হয় না।
২. সাদকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রে ঘরের অত্যাবশ্যকীয় আসবাব ছাড়া-
অন্যান্য আসবাব-পত্র
সৌখিন দ্রব্যাদি
খালি পড়ে থাকা ঘর বা ভাড়া ঘর। এসবই হিসাবে আসবে।
তাই ঈদের দিন সকালে নিজের একান্ত অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, থাকার ঘর ইত্যাদি বাদ দিয়ে যদি কোনো ব্যক্তির কাছে সাড়ে ৫২ তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম) রূপা অথবা সাড়ে ৭ তোলা (৮৭.৪৮ গ্রাম) সোনা থাকে তাহলে তাকে ফিতরা আদায় করতে হবে। এ ফিতরা আদায় করা ওই ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব।
আবার কারো কাছে সোনা ও রূপা মিলে যে কোনো একটির নিসাব পরিমাণ টাকা থাকে তবে তার ওপর সাদাকাতুল ফিতর দেয়া আবশ্যক। সোনা-রূপা ছাড়াও যদি কারো কাছে কিছু নগদ অর্থ, কিছু ব্যবহারের অতিরিক্ত মালামালসহ মিলিয়ে নেসাব পরিমাণ যে কোনো একটির পরিমাণ সম্পদ থাকে তবে তাকে ফিতরা দিতে হবে। যদি কারো ঋণ থাকে, তবে তা পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদ হিসাব করতে হবে।
অত্যাবশ্যকীয় আসবাব কী?
১. থাকার ঘর।
২.পরার জন্য কাপড়।
৩. ব্যবহারের গাড়ি ও অন্যান্য একান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী। যা সব সময় বা প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।
এর বাইরে ব্যতিক্রম হলো-
যেসব জিনিস বছরে একবারও ব্যবহার হয় না বা দু’এক বার ব্যবহার হলে তা ব্যবহার না করলেও কোনো সমস্যা নেই। তা হতে পারে-
১. ইলেক্ট্রনিক্স জিনিসপত্র।
২. যে কোনো ধরনের শোপিস
৩. সৌখিন জিনিস ইত্যাদি।
উল্লেখিত, সম্পদের মালিকদের ওপর সরকার নির্ধারিত হারে সাধ্যমত সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের টাকা ঈদের নামাজের আগে আদায় করা জরুরি।