ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সহকর্মীর চাপাতির আঘাতে খুন হন গ্রিল মিস্ত্রি আবুল কালাম (২৩)। বন্ধু শামীম এবং সহকর্মী স্বাধীন কালামকে খুন করেই থেমে থাকেনি, লাশ পুঁতে রাখে শামীমের ভাড়া বাসার মেঝেতে। কালামের সঙ্গে থাকা দুটি মোবাইল সেটও ব্যবহার করছিল শামীম। প্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইল সেটের সূত্র ধরে ঘটনার ছয়মাস পর রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী থেকে গ্রেফতার করা হয় শামীমকে। পরে তার সহযোগিতায় শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় স্বাধীনকে। দু’জনের সহযোগিতায় শুক্রবার দুপুরে শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় কালামের কঙ্কাল।
ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) শাহাদাৎ হোসেন সুমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিবি জানায়, কালাম, শামীম ও স্বাধীন একসঙ্গে চলাফেরা করত। কালামের সঙ্গে গ্রিল মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করত স্বাধীন। আর টেইলারিং মাস্টার ছিল শামীম। তারা কেউই বিয়ে করেননি। কালামের প্রেমিকাকে পছন্দ করত শামীম। এক্ষেত্রে কালাম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ নিয়ে কালামের ওপর ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ ছিল শামীম।
অন্যদিকে স্বাধীনের কাছে ৫০ হাজার টাকা পেত কালাম। এ টাকার জন্য স্বাধীনকে চাপ দিচ্ছিল কালাম। পরে শামীম এবং স্বাধীন মিলে কালামকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল কালামকে নিয়ে শামীম এবং স্বাধীন বোটানিক্যাল গার্ডেনে যান। সেখানে সুযোগ বুঝে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয় কালামকে। ওইদিন লাশ বোটানিক্যাল গার্ডেনের লেকের কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। পরদিন ১৪ এপ্রিল রাতে লাশ বস্তায় ভরে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দেয়াল টপকে ভ্যানযোগে নেয়া হয় রূপনগর দুয়ারীপাড়া এলাকার ৫নং রোডের শামীমের ভাড়া করা টিনশেড বাসায়। সেখানেই লাশ পুঁতে রাখা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে ডিবির এসি শাহাদাৎ হোসেন সুমা জানান, লাশ বাসায় নেয়ার সময় দুর্গন্ধ রোধে লাশের ওপর তিব্বত পাউডার ছিটিয়ে দেয়া হয়। বাসাটি বস্তি এলাকায়। বস্তির ঘরে শামীম একা থাকত। কাছাকাছি এলাকায় থাকত কালাম ও স্বাধীন।
১৩ এপ্রিল থেকেই কালামকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে রূপনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে শামীম ও তার বাবাকে আসামি করে জুনে একটি অপহরণ মামলা করা হয়। ওই মামলায় শামীমের বাবাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডেও নেয়া হয়। কিন্তু শামীমকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এসি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের আজ আদালতে হাজির করা হবে।
রূপনগর থানার ওসি সৈয়দ সহিদ আলম বলেন, আবুল কালামের পরিবারের পক্ষ থেকে তার বন্ধু শামীমকে সন্দেহ করা হচ্ছিল প্রথম থেকেই। আমরা তাকে ধরতে পারছিলাম না। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/সাদ