রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারকে আন্দোলনে শামিল হয়ে তাদের সঙ্গে সড়কে বসার দাবিও জানাতে থাকেন।
আজ রবিবার (১২ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২ টা থেকে অবরুদ্ধ রয়েছেন উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের পাঁচটি দাবি হল-
১>> হামলায় জড়িতদের শাস্তিড় আওতায় আনা,
২>> বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করা,
৩>> শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা,
৪>> হামলায় আহত ছাত্রদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাশনকে বহন করা এবং ‘
৫>> পুলিশের হামলা’র জবাবদিহিতা চাওয়া।
এদিন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে দক্ষিণ পাশে অবস্থিত উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষুব্ধরা অবস্থান নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এসো ভাই, এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘পুলিশের হামলা কেন, সন্ত্রাসীদের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘টোকাইদের কালো হাত, ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এসে শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়েন। সেখানে উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে শত শত শিক্ষার্থী অবস্থান নেন।
আন্দোলনরতরা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাবাস বাংলাদেশ মাঠে আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেখান থেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় ভিসিকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে আনা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে অবরুদ্ধ আছেন।
গত শনিবার বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সামান্য কথা-কাটাকাটির জের ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দুই পক্ষের ‘শক্তি প্রদর্শনের খেলা’ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিনোদপুর এলাকা। ইটপাটকেলের আঘাতে উভয় পক্ষের শ’খানেক জন আহত হন। পুলিশ বক্সসহ বেশকিছু দোকানে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় বিজিবিও। বাতিল হয় ট্রেনের যাত্রা।