সারাদিনের ব্যস্ততায় গরমে পথ চলতে শরীরে ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায় প্রচুর প্রয়োজনীয় পানি। এতে নিস্তেজ হয়ে আসে শরীর। এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তি এনে দিতে পারে ডাবের পানি। বাজারে তরল পানীয়গুলো জোর প্রচারণা চালিয়ে গেলেও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় গরমে এখনো সবার প্রথম পছন্দ ডাবের পানিই। শুধু ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা নয়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা সহ ডাবের পানিতে আছে আরো অনেক গুণ।
১>> ত্বকের ইনফেকশন ও অন্যান্য সমস্যায় ডাবের পানির ব্যবহার বেশ প্রচলিত। ডাবের পানিতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। এছাড়া ডাবের পানি ত্বকের অতিরিক্ত তেলকে দূর করতে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
২>> ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে ডাবের পানি অনেক বেশি কার্যকরী। এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন-সি, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৩>> হাড়কে মজবুত রাখার জন্য দরকার ক্যালসিয়ামসহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ। ডাবের পানিতে যে ক্যালসিয়াম আছে, তা হাড়ের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। সেইসঙ্গে আছে ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়কে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৪>> যাদের অ্যাকনের সমস্যা রয়েছে, তারা ডাবের পানি তুলায় ভিজিয়ে ত্বকের ওপর লাগাতে পারেন। তৈলাক্ত বা শুষ্ক যেকোনো ত্বকেই ব্যবহার করতে পারেন এই পানি। ডাবের পানি খেলে মুখের ত্বক আর্দ্র হয়। পাশপাশি বেশ তরতাজাও দেখায়। তাছাড়া ডাবের শাঁসে যে ক্যালরি রয়েছে তা কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
৫>> অতিরিক্ত গরমের ফলে শরীরে ঘামের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পানি বেরিয়ে যায়। আবার কখনো গরমে বমির ফলেও শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। ডাবে আছে কার্বোহাইড্রেড, যা শক্তি বাড়ায় এবং শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করে।
৬>> ডাবের পানিতে যে প্রাকৃতিক শর্করা ও মিনারেল রয়েছে তা শরীরকে শীতল ও আর্দ্র রাখে। এজন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যোদ্ধাদের স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে ডাবের পানি দেওয়া হতো। এর ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ফাইবার কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৭>> ডাবের পানি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং ক্ষুধার প্রবণতা কমে আসে। ফলে কম খাওয়া হয়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডাবের পানিতে কোনো চর্বি নেই। বরং এটি শরীরের অতিরিক্ত চিনি শোষণ করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮>> ডাবের পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। ফলে গরমের সময়ও শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে।
৯>> ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। হজমশক্তি অনেক বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া নিয়মিত ডাবের পানি খেলে অ্যাসিডিটির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
১০>> ডাবের পানি প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের জন্যও ডাবের পানি খুব উপকারী। এছাড়া ডাবের পানিতে রয়েছে ডাই-ইউরেটিক উপাদান, যা ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে নষ্টই শুধু করে না, পাশাপাশি শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে।
তথ্য সূত্রঃ পুষ্টিবিদ উম্মে সালমা তামান্না
ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার