যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবে এমন সকল ফ্লাইটের যাত্রীদের বিশেষ তল্লাশি/জিজ্ঞাসাবাদের বিধি জারি হয়েছে। মার্কিন নাগরিকেরাও এ বিধির আওতায় এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রগামী সব ফ্লাইটের যাত্রীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের নতুন নিয়ম কার্যকর হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এয়ারলাইন্সগুলো। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, উড়োজাহাজে যাত্রীদের সঙ্গে গোপনে বিস্ফোরক বহনের হুমকি ঠেকাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে, যার আওতায় থাকছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরাও। নতুন নিয়মে যুক্তরাষ্ট্রগামী উড়োজাহাজে চড়ার আগেই চেক ইন পয়েন্ট অথবা বোর্ডিং গেইটে যাত্রীদের সংক্ষিপ্ত জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। সেখানে তাদের সব ধরনের ব্যাক-গ্রাউন্ড যাচাই করা হবে। সঙ্গে থাকা মালামাল তল্লাশিতেও থাকবে কড়াকড়ি।
রয়টার্স লিখেছে, প্রতিদিন ১০৫টি দেশের ২৮০টি বিমানবন্দর থেকে ১৮০টি এয়ারলাইন্সের যুক্তরাষ্ট্রগামী ২ হাজার ১০০ বাণিজ্যিক ফ্লাইটের তিন লাখ ২৫ হাজার যাত্রীকে এই নতুন নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আর তাতে যাত্রী ব্যবস্থাপনায় সময় লাগবে বেশি; বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর কাজে জটিলতা ও যাত্রীদের ভোগান্তিও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও ব্যবসায়ী সংগঠন। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন জারিকৃত এক বিধি অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের ৮টি এবং ইউরোপের দুটি এয়ারপোর্ট থেকে সে সব দেশের এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের জন্য হ্যান্ডব্যাগে ল্যাপটপ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ১২০ দিনের জন্য, সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ সমাপ্তির দিনেই সকল যাত্রীর জন্য নতুন এ বিধি যুক্তরাষ্ট্রে আসতে আগ্রহী ব্যবসায়ী, ট্যুরিস্টদের শংকায় ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে সংকট দেখা দেবে ব্যবসা-বাণিজ্যে-এমন আশংকাও করা হচ্ছে।
আমিরাত, ইত্তেহাদ, কুয়েত, কাতার, সাউদি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ কার্যকর করার অংশ হিসেবে জেএফকে, লসএঞ্জেলেস, ডালাস প্রভৃতি এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়াও আগেই ফ্লাইটের সকল যাত্রীকে বিশেষ একটি ফরম দেয়া হবে। সেখানে উল্লেখ করতে হবে যাবতীয় তথ্য। কী কী মাল বহন করছেন, কী জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বা কোথায় থেকে ফিরছেন ইত্যাদি জানাতে হবে। এরপর নিরাপত্তারক্ষীরাও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং মালামাল পরীক্ষা করবেন। পাসপোর্ট/ভিসা পরীক্ষা করা হবে। খতিয়ে দেখা হবে যাত্রীর ব্যাকগ্রাউন্ড।
এর ধারাবাহিকতায় বুধবার আকস্মিক এক সার্কুলারে নতুন নিয়ম জারি করে বৃহস্পতিবার থেকেই তা কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়। টিএসএ থেকে এয়ারলাইন্সগুলোকে জানানো হয়েছে, নতুন নিয়ম মেনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা ১২০ দিন সময় পাবে। এয়ারলাইন্স ফর আমেরিকা নামের একটি সংগঠন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই নতুন নিয়মকে চিহ্নিত করেছে জটিল প্রক্রিয়া হিসেবে। আর ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিইও আলেক্সান্দ্রে ডি জুনিয়াক বলেছেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই হঠাৎ যেভাবে এই আদেশ জারি করল, তা খুবই অদ্ভুত।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি