ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে। আজ সোমবার এসব চিঠি পাঠান দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যদের অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রকল্পের নামে কোটি কোটির টাকা লুটপাট ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধানের স্বার্থে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. এর মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল, গঠনতন্ত্র, আর্থিক আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ জানানো হলো।
জনতা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় পাঠানো চিঠিতে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড ও প্রোগ্রাম ফর পারফরম্যান্স ইম্প্রুভমেন্টের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফরম, কেওআইসি, সিগনেচার কার্ড হিসাব খোলা ও পরিচালনা সংক্রান্ত সমিতির সব রেজ্যুলেশন চাওয়া হয়েছে।
আরব বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেডের (এবি ব্যাংক) কারওয়ান বাজার শাখায় পাঠানো চিঠিতে ওয়াসার অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফর্ম, কেওয়াইসি, সিগনেচার কার্ড ও ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ সব রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্র্যাক ব্যাংকের বিজয় নগর শাখায় পাঠানো চিঠিতে ওয়াসার অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফরম, কেওয়াইসি, সিগনেচার কার্ড ও ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ সব রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি চাওয়া হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. এর মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল, গঠনতন্ত্র আর্থিক আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমিতির বর্তমান ও পূর্ববর্তী কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যকরী কমিটির সব সদস্যের নাম, পদবি (দাপ্তরিক ও সমিতির) বর্তমান কর্মস্থল, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়েছে। এসব নথিপত্র আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে।
দুদকের তথ্য মতে, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। ওই মামলার তদন্তভার দুদকের হাতে ন্যস্ত হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট তাকসিম এ খানের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর থেকে তিনি এ পদে বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।