নারী ও পুরুষরা শারীরিক এবং জিনগতভাবেই আলাদা। আর এ কারণেই নারীদের কিছু দিক পুরুষরা বুঝতে পারেন না। আবার নারীরাও পুরুষের কিছু দিক বুঝতে পারেন না। আসুন জেনে নেওয়া যাক নারী ও পুরুষের ১০টি ভিন্নতা।
১. কোন জিনিসটা কোথায় তা বেশি মনে রাখতে পারেন নারীরা
আপনি হয়তো আপনার গাড়ির চাবিটি ঠিক জায়গায় না রেখে আপনার মাকে জিজ্ঞেস করলেন। আর আপনার মা তা বলে দিল। যা দেখে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন আপনার মা সবই জানেন।
আসলে নারীরা কোন জিনিসিট কোথায় রাখা হয়েছে তা বেশি মনে রাখতে পারেন। এ কারণেই নারীরা রাস্তার ল্যান্ডমার্ক মনে রাখতে পারেন আর পুরুষরা শুধু দিক ও দূরত্ব মনে রাখতে পারেন।
২. নারীরা কথা শোনায়ও পারদর্শী
এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, শ্রবণ এবং ভাষা সংশ্লিষ্ট নিউরন বা স্নায়ু নারীদের মধ্যে বেশি থাকে। আর এ কারণেই হয়তো নারীরা কোনো শব্দ বা বাক্য শুনে তা বেশি ভালোভাবে বুঝতে ও বিশ্লেষণ করতে পারেন।
এ থেকেই আপনি এখন বুঝতে পারছেন কেন একজন মা শিশুর কান্না থেকে দ্রুত তার সমস্যাটি বুঝে নিতে পারেন। নারীরা আসলে মনোযোগী শ্রোতাও বটে।
৩. নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন
মস্তিষ্কের যে অঞ্চলে ব্যথার প্রক্রিয়াজাতকরন হয় তা নারী ও পুরুষের বেলায় একটু ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। পুরুষের তুলনায় নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন। তথাপি নারীরা ব্যথা বেশি সহ্য করতে পারেন কিন্তু পুরুষরা কম সহ্য করতে পারেন। পুরুষরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অভিযোগ করা শুরু করেন এবং ধৈর্য্যহারা হয়ে পড়েন। আবেগগত ব্যথার ক্ষেত্রেও একই কথা।
৪. কে বেশি উদ্বেগে ভোগেন
যদিও এ ব্যাপারে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই তথাপি বর্তমান গবেষণায় দাবি করা হয়, পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি উদ্বেগে আক্রান্ত হন। এর কারণ হতে পারে হরমোন। কিন্তু উদ্বেগে ভোগার প্রবণতার কিছুটা সুবিধাও আছে। নারীরা অদেখা সমস্যার সমাধান এবং সংকট কাটিয়ে উঠতে বেশি পারদর্শী। কেননা তাদের উদ্বেগ তাদেরকে কোনো অপ্রত্যাশিত সমস্যার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুত করে রাখে।
৫. অগ্রাহ্য করার প্রবণতা
পুরুষদের শ্রবণ পদ্ধতি একটু ভিন্নভাবে কাজ করে। তারা চাইলেই তাদের চারপাশের বেশ কিছু আওয়াজ গুরুত্বহীন মনে করে অগ্রাহ্য করতে পারেন। কেউ কোনো কথা বারবার বলতে থাকলে পুরুষরা তাতে মনোযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেন। অন্যদিকে নারীরা সবকিছুই শুনতে চায় বা শুনতে পায়।
৬. মানসিক চাপের প্রতি প্রতিক্রিয়া
কী ঘটে যদি একজন নারী এবং একজন পুরুষ একই মাত্রার মানসিক চাপ বোধ করেন? পুরুষরা হয়তো তার মেজাজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু নারীরা শান্ত এবং ধীরস্থির থাকতে পারেন। কেন? মানসিক চাপের সময় যে রাসায়নিক নিঃসরিত হয় তা নারীদের মধ্যে এস্ট্রোজেনের সঙ্গে মিশে যায়। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে ওই একই রাসায়নিক টেস্টোস্টেরনের সঙ্গে মিশে এবং তাদেরকে আগ্রাসী করে তোলে।
৭. কে বেশি তর্ক করে
নারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, ভয় এবং দুঃখবোধ তৈরি হতে পারে। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে তাড়না তৈরি হয়। এর ইতিবাচক দিক হলো এর ফলে পুরুষরা প্রতিযোগীতায় জয়ী হয়। আর নেতিবাচক দিক হলো এর ফলে পুরুষরা অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন।
৮. আবেগ
পুরুষদের তুলনায় নারীরা আবেগ বেশি অনুভব করেন এবং বেশি ভালোভাবে আবেগ প্রকাশ করতে পারেন। কারণ সেভাবেই নারীদের দৈহিক ও মানসিক গড়ন তৈরি হয়েছে। বয়ঃসন্ধিকালে মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু পরিবর্তনই নারীদেরকে আবেগ প্রকাশে বেশি সক্ষম করে তোলে। আর পুরষরা সাধারণত তাদের বিশেষ কিছু আবেগ প্রকাশ না করে বরং লুকাতে চেষ্টা করেন।
৯. রাগ
নারীরা সাধারণত ক্ষুব্ধ হলে তা ভাষায়ই প্রকাশ করতে পারেন সহজে। অন্যদিকে, পুরুষরা তাদের মেজাজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শারীরিকভাবে রাগ প্রকাশ করতে গিয়ে বিপদে পড়েন। পুরুষদের মস্তিষ্কের যে অংশ রাগ নিয়ন্ত্রণ করে তা তাদের মস্তিষ্কের সেই অংশের সঙ্গে যুক্ত যা শারীরিক তৎপরতারও নির্দেশ দেয়।
আর নারীদের মস্তিষ্কের যে অংশ রাগ নিয়ন্ত্রণ করে তা তাদের মস্তিষ্কের কথা বলার অংশের সঙ্গে যুক্ত। আর এ কারণেই নারীরা ক্ষুব্ধ হলে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। আর পুরুষরা শারীরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিপদে পড়েন।
১০. অবৈধ যৌন সম্পর্ক
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষরা তাদের জীবন সঙ্গীনি যদি যৌন প্রতারণা করে তা দ্রুত ও সহজে টের পেয়ে যান। আর পুরুষরা এতে খুব বেশি বেদনাহত হন। নারীরাও তাদের পুরুষটি যৌন প্রতারণা করলে মর্মাহত হন। কিন্তু তারা বেশি বেদনাহত হন যদি তাদের পুরুষটি অন্য কোনো নারীর সঙ্গে আবেগগতভাবে বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। অন্যদিকে, পুরুষরা বেশি বেদনাহত হন যদি তাদের নারীটি অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে দৈহিকভাবে ঘনিষ্ঠ হন। সূত্র: বোল্ডস্কাই
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে