দেশের সাত জেলায় বজ্রপাতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ২জন, ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এক স্কুলছাত্র, শেরপুরের নকলায় ২জন, নাটোরের সিংড়া ও বড়াইগ্রামে নারীসহ ২জন, ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডুতে এক কৃষক, পাবনার ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ায় ২জন, কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারায় ২জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এসব ঘটনা দিনের বিভিন্ন সময় ঘটে।
ময়মনসিংহ সংবাদদাতা জানান, ধোবাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে আবু বকর (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের পূর্ব টাঙ্গাটি গ্রামে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। মৃত আবু বকর ওই এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে। তিনি পাটকা দামপাড়া উচ্চবিদ্যালয় ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ তথ্য ধোবাউড়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জালাল উদ্দীন নিশ্চিত করেছেন।
শেরপুর সংবাদদাতা জানান, নকলা উপজেলায় পৃথক দুটি এলাকায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন, চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রেহারচর এলাকার মৃত. সিদ্দিক সরকারের ছেলে নাজমুল হক (৪৫) ও উরফা ইউনিয়নের হাসনখিলা এলাকার মন্নেস আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম অপি (৩০)।
উরফা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম তালুকদার ভুট্টো জানান, রফিকুল তার ভাইদের নিয়ে আমন ধান রোপনের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশের বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলতে যায়। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে আহত হন তিনি। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অপিকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে আলাদা ঘটনায় নাজমুল হক (৪৫) নামে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
নিহতের ভাই মোজাম্মেল হক কালা মিয়া জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির সময় নদীতে মাছ ধরার জন্য নাজমুল হক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর সময় অতিবাহিত হলেও সে আর বাড়ি ফিরেনি। পরে তার বড় ভাই মোজাম্মেল হক কালা গ্রামের সাবেক মেম্বার সফর উদ্দিনের পুকুড় পাড় থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, হরিনাকুন্ডু উপজেলার নারায়নকান্দি গ্রামে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে গ্রামের ধাপগাড়ীর মাঠ নামক স্থানে তার মৃত্যু হয়। মৃত ব্যক্তি বাবুল হোসেন (৪০) ওই গ্রামের কাজীপাড়ার ইছাহক আীল মণ্ডলের ছেলে।
এ তথ্য নারায়ণকান্দি পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
নাটোর সংবাদদাতা জানান, নাটোরের সিংড়া ও বড়াইগ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে নারীসহ দুজনের। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও একজন।
জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির হাঁস চড়াতে বাইরে যায় ফাতেমা। হাঁস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে মারা যান তিনি। পরে বাড়ির লোকজন খোঁজাখুজি করে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে মরদেহ বাসায় নিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। ফাতেমা বেগম (২৮) সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের তালঘড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার ভবানীপুর বিলে ধানের জমিতে নিড়ানীর কাজ করছিলেন মিয়াজি (৪২) ও সেলিম (৩০) নামের দুই কৃষক। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মিয়াজির মৃত্যু হয়। সেলিম গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বনপাড়া পাটোয়ারী হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। সেখানে তার চিকিৎসা চললেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, নবীগঞ্জ উপজেলায় পৃথকস্থানে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন, সাদিকুর রহমান কালিয়ারভাঙা গ্রামের জামিরুল ইসলামের ছেলে ও বাল্লা-জগন্নাথপুর গ্রামে গ্রামের রবীন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে ওমর বিশ্বাস (২২)।
জানা গেছে, আজ বেলা ১১টায় নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা হাওরে জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে সাদিকুর রহমান (২৭) নামে এক কৃষক আহত হন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বেলা ১২টার দিকে উপজেলার বাল্লা-জগন্নাথপুর গ্রামে জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ওমর বিশ্বাস (২২) নামে আরেক কৃষকের মৃত্যু হয়।
এ তথ্য নবীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদ নিশ্চিত করেছেন।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলায় আজ মঙ্গলবার সকালে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন, ঈশ্বরদী পৌরসভার ফতেমোহাম্মদপুর এলাকার মৃত হোসেন উদ্দিন ফকিরের ছেলে কৃষক আইন উদ্দিন (৭০)। অপরজন, আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের কাকমারি গ্রামের মহির উদ্দিন মোল্লার ছেলে সাদেক হোসেন মোল্লা (৩৮)।
আটঘরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ও ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সকালে ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর ও মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম এলাকায় এ দুটি ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন, মিরপুরের ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম এলাকার জবেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর ও ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামের ফজলু মাতবরের ছেলে আশরাফুল।
এ তথ্য দুই থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।