জন্ম, মৃত্যু আর বিবাহ- এ তিন যে কখন, কোথায় হয়, তা কেউ আগাম বলতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বিয়ে টিকবে কি টিকবে না, তা-ও কেউ আগ বাড়িয়ে অনুমান করতে পারেন না।
তবে যাঁরা ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করেন, তাঁরা বহু কাপলকে দেখেন। হবু দম্পতি থেকে নবদম্পতির বিভিন্ন মুহূর্তের সাক্ষী থাকেন। আর সেগুলো পর্যালোচনা করলেই একটা প্যাটার্ন বা নকশা ফুটে ওঠে, যা থেকে তাঁরা আঁচ করতে পারেন দাম্পত্যের বাঁধন কতটা জোরালো। তা কী কী লক্ষণের দিকে নজর রাখেন ফটোগ্রাফাররা?
লেন্সের ওপারে তাঁদের চোখ নিবিষ্ট থাকে বটে, তবে সেখানেই ধরা পড়ে অনেক ব্যবহারিক ফারাক। যেমন, কোনো কোনো কাপলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বউ নিজের প্রতিই বেশি নজর দিচ্ছেন। পোশাক থেকে গয়না বা মেক আপে তাঁর যতটা খেয়াল, ততটা নজর নেই তাঁর হবু স্বামীর দিকে। কখনো কখনো শুটিং করতে গিয়ে ফটোগ্রাফাররা দেখেন, রীতিমতো অপ্রস্তুতকর অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বরেদের। সেখান থেকেই অনুমান করা যায়, দুজন মানুষের তালিমিলে বিস্তর গণ্ডগোল আছে। বাইরে শুটিংয়ের সময় পোশাক পাল্টাতে পাল্টাতে দিন কাবার করে ফেলেন বউ।
অন্যদিকে রোদ্দুরে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে থেকে অস্থির হয়ে ওঠেন বর। এতে বোঝা যায়, একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল নন ওই দম্পতি। তাঁদের ধারণা, এই ধরনের দাম্পত্যে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দেয়।
বরের জুতো চুরি বিয়েতে একটা মজার ঘটনা। প্রায় প্রতি বিয়েবাড়িতেই তা হয়। ফটোগ্রাফারদের অনেকে জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই প্রথা খুব নোংরা পর্যায়ে পৌঁছায়। মজা নিছক মজা থাকে না। দু’টি পরিবারই বিষটিকে ইগোয় নিয়ে নেয়। ফলে একটা অনড় অবস্থান তৈরি হয়। সে ঝামেলা যদিও বা মেটে, তবে বর-বউ নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে বিয়ের আগে বা পরে ঝামেলায় জড়ান। ফটোগ্রাফাররা তাতেই অশনি সংকেত দেখেন। যাঁরা হবু দম্পতি হতে চলেছেন, বা সদ্য মালা বদল করেছেন, তাঁদের মধ্যে ভালোবাসা কতখানি আছে, তাও আঁচ করতে পারেন ফটোগ্রাফাররা।
অনেকসময় একে অপরের হাত পর্যন্ত ধরতে অস্বীকার করেন তাঁরা। কখনও বা লোক দেখানো বা দায়সারাভাবে ছবি তুলে পালাতে পারলে বাঁচেন। এ লক্ষণ যে ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনছে, এমনটাই মনে করেন ফটোগ্রাফাররা। আবার অনেক সময় তাঁদের নজরে পড়েছে ভিত্তিহীন বা সামান্য বিষয় নিয়েও বিয়ের দিন ঝগড়াঝাটি করেন কাপলরা। বিয়ের মতো সুন্দর অনুষ্ঠান, এবং যা কিনা জীবনের একটা স্মরণীয় দিন, সেই দিনের মাধুর্য নষ্ট করেন সামান্য ইস্যুতে। এ জিনিসকেও খুব একটা ভাল চোখে নেন না চিত্রগ্রাহকরা। অনেক ধনী বাড়িতেই আজকাল বিয়ের আগে কেক কাটার অনুষ্ঠান হয়।
ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন, হবু দম্পতিরা সকলকেই কেক খাওয়ান শুধু নিজেরা নিজেদের মুখে কেক তুলে দেন না। তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে, বেশির ভাগ সময়ই এই বিয়েগুলো বাতিল হয়ে গিয়েছে। তবে কখনো সখনো বিস্ময়কর অভিজ্ঞতাও হয়েছে। যেমন উপরের লক্ষণগুলির কোনো কিছুই ছিল না। হাসিখুশি দম্পতি। একে অপরকে চোখে হারাচ্ছেন, এ রকম অবস্থা। সে বিয়ে হয়েও শেষমেশ কেঁচে গিয়েছে। তাই নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। তবে তাঁদের সাধারণ অভিজ্ঞতা বলছে, ওপরের লক্ষণগুলো মিললে সাধারণত বিয়ে টেকে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে