রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারের পাঁচ আরোহী নিহত হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান নবদম্পতি রেজাউল করিম হৃদয় (২৬) ও রিয়া মণি (২১)। তাদের গতকাল সোমবার ঘটনার পর উদ্ধার করে রাজধানীর উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রাতে জরুরি বিভাগের পর্যবেক্ষণ কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, হৃদয় ও রিয়াকে স্বজনরা ঘিরে রয়েছেন। বেশিরভাগ সময়ই নবদম্পতি অন্যমনস্ক থাকছেন। ক্ষণে ক্ষণে তারা হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন। হৃদয়ের মা, ভাই ও স্বজনরা মিলে চেষ্টা করছেন তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এন আলম মাসুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুর্ঘটনায় শুধু হৃদয়ের ডান পায়ে সামান্য আঘাত রয়েছে। এ ছাড়া দুজনেই অক্ষত আছেন। তাদের শারীরিক কোনো সমস্যা নেই। তবে মানসিক ট্রমা কাটিয়ে উঠতে তাদের সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম তাদের রিলিজ দেব। কিন্তু পরে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী এবং ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম তাদের দেখতে এসেছিলেন। তিনি ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য তাদের আরও কিছু সময় হাসপাতালে রাখতে বলেছেন। এ জন্য দুজনকে এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জসিমউদ্দীন মোড় সংলগ্ন সড়কে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) স্থাপনা প্রকল্পের একটি গার্ডার প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া ছাড়া প্রাইভেটকারের পাঁচ আরোহী নিহত হন।
নিহতরা হলেন- হৃদয়ের বাবা আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল (৫০), হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা আক্তার (৪২), কনে রিয়ার খালা ঝর্না আক্তার (২৮), তার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রকল্পের কাজ চলাকালীন একটি গার্ডার ক্রেন দিয়ে উপরে তোলা হচ্ছিল। হঠাৎ ক্রেনটি গার্ডারসহ কাত হয়ে যায় এবং নিচ দিয়ে যাওয়া একটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ওই প্রাইভেটকারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়।