বাংলাদেশ হ্যান্ডবল দলের কোচ আমজাদ সেলকুকলু মিউনিসিপ্যালিটি স্পোর্টস হল থেকে বেরিয়ে টিম বাস খুঁজছেন। তিনি পুরো স্টেডিয়াম চত্বর ঘুরেও বাসের দেখা পাননি। ম্যাচ খেলে ক্লান্ত খেলোয়াড়রা তীব্র রোদে রাস্তায় দাঁড়াতে না পেরে বসে পড়লেন পাশের এক পার্কে। অন্য ম্যাচ চলতে থাকায় আবার ড্রেসিংরুমে গিয়ে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগও ছিল না বাংলাদেশ দলের।
সাধারণত গেমসে আলাদা একজন লিয়াজোঁ অফিসার থাকেন প্রতিটি দলের জন্য। এই গেমসে পুরো বাংলাদেশ দলের জন্য একজন মাত্র লিয়াজোঁ। হ্যান্ডবল দলের সঙ্গে কোনো লিয়াজোঁ না থাকায় কোচ, কর্মকর্তারা স্থানীয় ভলান্টিয়ার ও আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। তাদের অনেক আবার ইংরেজী বোঝেন না। মোবাইলে ইংরেজী লিখে তুর্কি অনুবাদ করে বোঝাতে হয়।
এভাবে একাধিক জনের সঙ্গে ততোধিকবার কথা বলার পর বাংলাদেশ হ্যান্ডবল দল জানতে পারে তাদের বাস চলে গেছে। এখন অন্য বাস আসবে নেওয়ার জন্য। এই অপেক্ষা বেশ কষ্টকর ছিল হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের জন্য।
বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় বলছিলেন, ‘এখন তিনটার বেশি বাজে। ভিলেজে সাড়ে তিনটার মধ্য খাওয়া শেষ হয়ে যাবে। সঠিক সময় যেতে না পারলে হয়তো খেতেও পারব না’। খেলোয়াড়দের শঙ্কাই সত্যি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ হ্যান্ডবল দল মধ্যাহ্ন ভোজ করতে পারেনি।
বাসের মতো সমন্বয়হীনতা ছিল ম্যাচের সূচিতেও। গতকাল উজবেকিস্তানের বিপক্ষ বাংলাদেশের ম্যাচটি ছিল স্থানীয় সময় দুপুর ১ টায়। গতকাল আয়োজকরা জানায় ম্যাচটি এক ঘণ্টা এগিয়ে বারোটায় করা হয়েছে। বাংলাদেশ দল সেই অনুসারে ভেন্যুতে আসে। এখানে এসে জানতে পারে ম্যাচটি ১২ টার পরিবর্তে আগের ১ টার সময় নেওয়া হয়েছে। রুমকি ও রিতু আক্তারের জাম্প ইভেন্টও কয়েক দফা পরিবর্তন হয়েছে।
অ্যাথলেট, কোচদের মতো ভোগান্তির শিকার গেমস কাভার করতে আসা সাংবাদিকরাও। যে কোনো গেমসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। গতকাল গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ছিল প্রায় একই সময় ৷ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট কাভার করে কয়েকটি দেশের সাংবাদিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারেননি।
এতে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়া থেকে আগত এক সাংবাদিক, ‘ইসলামিক গেমসের বিগত আসরগুলো কাভার করেছি। এই গেমসে ব্র্যান্ডিং বিগত আসরগুলোর চেয়ে ভালো তবে সমন্বয়হীনতা ব্যাপক। ১০০ মিটার স্প্রিন্ট কাভার করে সাংবাদিকদের অনেকেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারছেন না। এটা দুঃখজনক।’
গেমসে নিয়োজিত ভলান্টিয়ারদের অনেকে ইংরেজি ভালো জানেন না। ফলে ভলান্টিয়ারদের সহায়তা নিতে গিয়ে উল্টো নির্দেশনা পেয়ে ভোগান্তি বাড়ছে অনেকক্ষেত্রে।