যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নিন্দা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘একমুখী বিশ্বের যুগের’ সমাপ্তি হয়েছে। গত শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে এ ঘোষণা দেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘স্নায়ুযুদ্ধে জয় লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীতে নিজেদের ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসাবে ঘোষণা করেছিল, যাদের কোনো দায়িত্ব নেই – শুধুমাত্র স্বার্থ। তারা সেই স্বার্থগুলিকে পবিত্র বলে ঘোষণা করেছে। তাদের সেই একমুখী আচরণই বিশ্বকে অস্থির করে তুলেছে।’
সাইবার আক্রমণের কারণে পুতিনের ভাষণ শুরু করতে দেরি হয়েছিল ৯০ মিনিটের বেশি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কনফারেন্সের সিস্টেমগুলো (ডিডিওএস) হামলার শিকার হওয়ায় ভাষণটি স্থগিত করা হয়েছিল। হামলার পেছনে কারা জড়িত তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মঞ্চে উঠেই পুতিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের তীব্র সমালোচনা শুরু করেন। পুতিন বলেন, পশ্চিমারা তাদের নিজস্ব বিভ্রমের ভেতর বাস করে। তারা মনে করে তারা জিতেছে। বাকি সবকিছু উপনিবেশ … সেখানে বাসকারীরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক।
রাশিয়ার অর্থনীতিকে আঘাত করার চেষ্টার জন্য পশ্চিমাদের দোষারোপ করেন পুতিন। তিনি মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞাকে ‘পাগলামি’ এবং ‘বেপরোয়া’ বলে অভিহিত করেন। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা এরই মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন পুতিন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্যই বেশি ক্ষতিকর যারা তা আরোপ করে।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪০ কোটি ডলারের লোকসান হতে পারে বলে উল্লেখ করেন পুতিন। তার মতে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার রাজনৈতিক কর্তৃত্বও খুইয়েছে।
ভ্লাদিমির পুতিন আরও বলেন, ‘ইইউ দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। নিষেধাজ্ঞার পরিণতিতে অসমতা কেবলই আরও বেড়ে যাবে। এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইউরোপের মানুষের বাস্তবিক স্বার্থের দিকটিকে একপাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শক্ত মানুষ। যে কোনো চ্যালেঞ্জই আমরা মোকাবেলা করে চলতে পারি। রাশিয়া একটি শক্তিশালী এবং সার্বভৌম জাতি হিসেবে যাত্রা শুরুর সূচনালগ্নে প্রবেশ করছে। বর্তমান সময়ে ধরা দেওয়া ব্যাপক সুযোগ আমরা নিশ্চিতভাবেই কাজে লাগাব এবং আরও শক্তিশালী হব।’ পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে রাশিয়া কাজ করে যাবে বলেও জানান পুতিন।