চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পেছনে ‘কিছু একটা ঘটেছে’ বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মন্তব্য করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে, এটা আমার বিশ্বাস। না হলে এতগুলো প্রাণ যায় না।’
মঙ্গলবার (৭ জুন) পুরান ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে অগ্নিনির্বাপণকর্মী শাকিল তরফদারের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ কথা বলেন।
কীভাবে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কার গাফিলতি, স্যাবোট্যাজ বা উদ্দেশ্যমূলক কি না জানতে এনকোয়ারি করতে হবে।’
বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের দুর্ঘটনার পেছনে ‘পাওয়ারফুল’ কেউ থাকলে শাস্তি হবে কি না জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো দিন কাউকে ছাড় দিয়েছেন? যারই সংশ্লিষ্টতা থাকুক, শাস্তি পেতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সীতাকুণ্ডে এতজন অগ্নিনির্বাপণকর্মীর প্রাণহানির পর ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন, আরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন কি না।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এখনকার ফায়ার সার্ভিস আগের মতো নয়। এখন তারা আর ঘণ্টি বাজানো বাহিনী নয়, একটি অত্যাধুনিক বাহিনী। আগে আগুন নেভার পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে হাজির হতো। ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে সরকার। ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ চলছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান নিজেই ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করেন । ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অকুতোভয়, রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন। সিলেটে জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান ও এফআর টাওয়ারে ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাঁরা জীবনের পরোয়া করেন না, ডাক এলে একমুহূর্ত দেরি করেন না।’
গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আগুন লাগার ৬১ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম।
বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে কলকারখানায় আগুন লাগলেও এবারই প্রথম ফায়ার সার্ভিসের নয়জন কর্মীর প্রাণহানি ঘটল । আজ সকাল তিনজন কর্মী এ পর্যন্ত নিখোঁজ। তা ছাড়া দুজন মুমূর্ষু অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
