ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল প্রতিবেশীদের পাশাপাশি দুর্বল দেশগুলোয় গম রপ্তানি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে গতকাল বুধবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে পীযূষ গোয়েল এ কথা বলেন। তিনি এ নিয়ে টুইটও করেছেন।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের গম রপ্তানি বিশ্ববাণিজ্যের ১ শতাংশের কম। আমাদের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিশ্ববাজারকে প্রভাবিত করবে না।’ পীযূষ গোয়েল বলেন, ‘আমরা দুর্বল দেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোয় (গম) রপ্তানির অনুমতি অব্যাহত রাখব।’
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, মন্ত্রী বলেছেন যে ভারত গুরুতর প্রয়োজন রয়েছে, এমন বন্ধুত্বপূর্ণ ও ক্রেডিট লেটার রয়েছে, এমন দেশগুলোয় গম রপ্তানির অনুমতি অব্যাহত রাখবে।
বাসস জানায়, পীযূষ গোয়েলের বক্তব্যের আলোকে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল নয়াদিল্লিতে একটি বিবৃতি ইস্যু করেছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, পীযূষ গোয়েল বলেছেন, গুরুতর প্রয়োজন রয়েছে—এমন দেশগুলোর পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ ও ক্রেডিট লেটার থাকা দেশগুলোয় গম রপ্তানির অনুমতি অব্যাহত রাখবে ভারত।
পীযূষ গোয়েল বলেন, চলতি বছর গম উৎপাদন ৭ থেকে ৮ শতাংশ বৃদ্ধির প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তীব্র দাবদাহের কারণে ফসল আগাম কাটতে হয়। এতে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা যা উৎপাদন করছি, তা অভ্যন্তরীণ চাহিদার জন্য যথেষ্ট।’
পীযূষ গোয়েল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক গমের বাজারে ভারত কখনোই নিয়ন্ত্রক ছিল না। দুই বছর আগে ভারত গম রপ্তানি শুরু করে।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত গত বছর ৭ এলএমটি গম রপ্তানি করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে গত দুই মাসে বেশির ভাগ গম রপ্তানি করা হয়েছে। ১৪ মে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। সেদিন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।
কৃষ্ণসাগর অঞ্চল থেকে রপ্তানিতে ধস নামায় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গম উৎপাদনকারী ভারতের ওপর নির্ভর করে আসছিল বৈশ্বিক ক্রেতারা
তীব্র দাবদাহের কারণে ভারতে এবার গমের উৎপাদন কম হয়েছে। ব্যাপক রপ্তানি-চাহিদার মধ্যে স্থানীয় বাজারে গমের দাম রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গম রপ্তানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে কৃষ্ণসাগর অঞ্চল থেকে গম রপ্তানিতে ধস নামে। এ কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গম উৎপাদনকারী দেশে ভারতের ওপর নির্ভর করে আসছিল বৈশ্বিক ক্রেতারা। ভারতের রপ্তানি-নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক বাজারে গমের দাম আরও বাড়ে।