ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিতে ফের শুরু হয়েছে ভাঙন। রাজ্যটির অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা এবং কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুরের সংসদ সদস্য অর্জুন সিং বিজেপি ছেড়ে ফিরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ২০১৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শ্রমিক নেতা হিসেবে পরিচিত অর্জুন সিং।
আজ রোববার (২২ মে) সন্ধ্যায় অর্জুন সিং কলকাতার ক্যামেরা স্ট্রিটের অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে আবার দলে ফেরেন।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি ছাড়ার কারণ হিসেবে অর্জুন সিং বলেন, বিজেপিতে গিয়ে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছিলেন না। তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই কাজ করতে চান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুর এলাকার স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। স্থানীয় নেতা পার্থ ভৌমিক বলেন, আগামী ৩০ মে ব্যারাকপুর এলাকায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অর্জুন সিং সহ উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার শীর্ষ তৃণমূল নেতারাও উপস্থিত থাকবেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, অর্জুন সিং তৃণমূলে ফেরার পর ব্যারাকপুরে দুর্বল হয়ে পড়বে বিজেপি। কারণ অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে তার হাজারো কর্মী-সমর্থক আবারও তৃণমূলে ফিরবেন। আগামী বছর রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এরপর ২০২৪ সালে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন। এমন অবস্থায় অর্জুন সিং বিজেপি ছাড়ায় দলটি বড় সংকটে পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যদিও বিজেপির শীর্ষ নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, অর্জুন সিং দল ছাড়ায় গেরুয়া শিবিরে কোনো প্রভাব পড়বে না। বিজেপি সর্বভারতীয় একটি রাজনৈতিক দল, যেখানে আদর্শ ও নীতির ভিত্তিতে রাজনীতি চলে। কেউ চলে যাওয়ায় কিছু যায় আসে না।
এদিকে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস দুই দলকেই আক্রমণ করেছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহু নেতা-কর্মী তৃণমূল থেকে বিজেপি এবং বিজেপি থেকে তৃণমূলে গেছেন। উভয় দলের নেতা-কর্মীরাই ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে পছন্দ করেন।
এর আগে ২০২১ সালে তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন তৃণমূলের অনেক নেতা। সে বছর বিপুল জয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর পুরোপুরি পাল্টে যায় স্থানীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট।
এর ফলে একদিকে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা যেমন ফিরছেন, তেমনি বিজেপি করেন এমন অনেককে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে।