ভারতে করোনা মহামারিতে মানুষ মারা গেছে ৪৭ লাখের বেশি। অথচ দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ২০ হাজার জনের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভারত প্রায় ৪২ লাখ মৃত্যুর সংখ্যাই কম দেখিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা গেছে। ২০২১ সালের শুরুতেই ভারত দেখেছে মহামারির দ্বিতীয় স্রোত। ওই সময় হাসপাতালে পর হাসপাতালে বেড পেতে ছুটতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ভারতে ২০২০ সালের আগস্টের মধ্যে যতদিন লকডাউন ছিল, ততদিন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। তবে মৃত্যু মিছিল বাড়তে থাকে সেপ্টেম্বরের পর থেকে। ভারতে মৃত্যুর যা স্বাভাবিক অংক তার থেকে ১৩ শতাংশ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা করোনাকালে। ভারতের পাশাপাশি, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো ও পেরু করোনায় মৃতের সংখ্যা কমিয়ে প্রকাশ করেছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখানোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারত।
টরন্টোতে গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অতিরিক্ত মৃত্যু গণনাকে সমর্থনকারী বিশেষজ্ঞ ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য প্রভাত ঝা বলেছেন, ‘মূলত করোনা থেকে ভারতীয় মৃত্যুর হার ব্যতিক্রমীভাবে কম ছিল না, শুধুমাত্র ব্যতিক্রমীভাবে কম গণনা করা হয়েছিল।’
ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য আরেক সদস্য এরিয়েল কার্লিনস্কি বলেন, ‘আমি আশঙ্কা করছি যে, এখনও পর্যন্ত সব (উপাত্ত) সহজলভ্য হলেও, সরকার এটি প্রকাশে দ্বিধা বোধ করবে কারণ এটি তাদের প্রকাশিত (মৃত্যু) পরিসংখ্যান এবং বিভিন্ন কারণে ভারতের করোনা মহামারি মোকাবিলার বর্ণনার সাথে বিরোধপূর্ণ।’
ভারত অবশ্য এই পরিসংখ্যানের গণনা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যেই মডেলের নিরিখে এই পরিসংখ্যান সামনে আনা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দেশটি।
সংবাদ সূত্রঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা