ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পার করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এমন সময়ে নতুন রানি কে হবেন সে বিষয়ে জানিয়ে দিলেন তার মনের \’আন্তরিক ইচ্ছা\’।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ইচ্ছা, প্রিন্স চার্লস রাজা হলে ডাচেস অব কর্নওয়াল ক্যামিলাকে তার কুইন কনসর্ট হবেন। তিনি বলেন, তার ‘আন্তরিক ইচ্ছা’ ছিল ক্যামিলা এই উপাধি পাক। মূলত যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন রাজার স্ত্রীকে ‘কুইন কনসর্ট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাই স্বামী প্রিন্স চার্লস রাজা হওয়ার পর ক্যামিলার পদবি হবে ‘রানি’।
এই বার্তায়, ক্লিয়ারেন্স হাউসের মুখপাত্র প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা রানির ঘোষণায় ‘মুগ্ধ এবং সম্মানিত’ বোধ করছেন। দীর্ঘ সাত দশকের রাজনৈতিক জীবনে যুদ্ধ-পরবর্তী ব্রিটেন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত নানা ইতিহাসের সাক্ষী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্ম ২১ এপ্রিল ১৯২৬। বাবা ষষ্ঠ জর্জ ও মা এলিজাবেথ বউয়েস। ১৯৩৭ সালে এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ ব্রিটেনের রাজার আসনে বসেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার মাথায় উঠে রাজমুকুট।
১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে প্রথম সিংহাসনে আরোহণ করেন তিনি। এলিজাবেথের দাম্পত্যসঙ্গী ছিলেন প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ, ডিউক অব এডিনবরা। তাদের চার সন্তানি- চার্লস, অ্যানি, অ্যান্ড্রু এবং অ্যাডওয়ার্ড।
সুদীর্ঘ এ পথচলা রানির জন্য যে খুব মসৃণ ছিল এমনটা নয়। বিভিন্ন সময় পারিবারিক নানা কারণে শিরোনামে এসেছে এলিজাবেথের নাম। সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় ছেলে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সামরিক ও রাজকীয় পদমর্যাদা বাতিল করেন তিনি। আর বছর তিনেক আগে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান বিতর্ক নিয়েও জলঘোলা কম হয়নি। তবুও জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের।
বিশ্বের ১৬টি সার্বভৌম রাষ্ট্র, অর্থাৎ কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোর বর্তমান রানি ও রাষ্ট্রপ্রধান। কমনওয়েলথ প্রধান ছাড়াও তিনি ৫৪ সদস্যবিশিষ্ট কমনওয়েলথ অব নেশনসেরও প্রধান। দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্যের শাসনকর্তা এবং চার্চ অব ইংল্যান্ডেরও প্রধান।
ব্রিটেনের হাজার বছরের বিরল ইতিহাসের সাক্ষী হলেন তিনি, হলেন প্রথম ব্যক্তি। এর আগে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকার রেকর্ড রয়েছে রানি ভিক্টোরিয়ার। ১৮৩৭ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত ৬৪ বছর রাজত্ব করেন রানি ভিক্টোরিয়া।
সংবাদ সূত্রঃ বিবিসি