জয়পুরহাটে কিডনি কেনাবেচার অভিযোগে ৯ জন আটক

জয়পুরহাটের কালাইয়ে মানবদেহের কিডনি ক্রয়-বিক্রয়কারীর মূল হোতাসহ ৯ জনকে আটক করেছে জয়পুরহাট র‍্যাব। র‍্যাব-৫ রাজশাহী অঞ্চলের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. জিয়াউর রহমান তালুকদার আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জয়পুরহাট ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

আটককৃতরা হলেন- উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের উলিপুর (ফকিরপাড়া) গ্রামের মৃত আবু সাইদ আকন্দের ছেলে, মো. খাজা ময়েনউদ্দিন (৪৪), মো. আবুজার রহমানের ছেলে মো. আজাদুল ইসলাম (৩৭), মো. বোরহান উদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুল করিম ফোরকান আলী (৪৫), উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে মো. আফসার মণ্ডল, আফসার ফকির (৫৬), মৃত আছির উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো.নুরুল ইসলাম (৫০), পূর্ব কিষ্টপুর (গ্রামতলা) মৃত আবু বক্কর ফকিরের ছেলে মো. বাবলু ফকির (৫২), দুধাইল নয়াপাড়া গ্রামের মো. আব্বাস আলী মণ্ডলের ছেলে মো. সোবহান মণ্ডল (৫২) ও মো. মজাহিদুল মণ্ডল (৪০), মৃত মোখলেছার রহমানের ছেলে মো. সাজেদুল ফকির (৩৭)।

এতে র‍্যাব-৫ সিপিসি-৩, জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে পাঠানো প্রেস রিলিজ এর মাধ্যমে জানা যায়, কিডনি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত একটি মামলা ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে র‍্যাব-৫ একটি অভিযান পরিচালনা করে এ চক্রের পাঁচজন সদস্যকে আটক করে এবং দশ বারোজন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এ চক্রের সক্রিয়তা ও ভয়াবহতা বিবেচনা করে র‍্যাবের ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় জয়পুরহাট র‍্যাব ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার তৌকির এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদের নেতৃতে গতকাল মঙ্গলবার জয়পুরহাট জেলার কালাই থানাধীন বৈরাগীহাট এবং মোসলেমগঞ্জ এলাকায় দ্বিতীয অভিযান পরিচালনা করে ওই চক্রের ৯ সদসকে আটক করে।

আটককৃতরা উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনি ক্রয-বিক্রয়কারী দালালদের একটি শক্তিশালী নেটওযার্ক গড়ে তুলে। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে প্রধানত গরিব, দরিদ্র ও আর্থিক অনটনে জর্জরিত মানুষদের টার্গেট করে। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের দেহ হতে মূল্যবান কিডনি সংগ্রহ করে। সংগ্রহকৃত কিডনি গ্রাহকেরা প্রধানত দেশের ধনী পরিবার ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ। চক্রটি বিভিন্ন ধাপে ভিকটিমদের কিডনি গ্রাহক শ্রেণির কাছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে।

মোটা অঙ্কের টাকার লোভেই ভিকটিমরা শুধুমাত্র ওই কাজে প্ররোচিত করেন। তবে কিডনি নিয়ে চক্রটি চুক্তি মোতাবেক পাওনা পরিশোধ করে না। পরবর্তীতে ভিকটিমরা টাকা চাইলে তাদের প্রাণনাশের হুমকিসহ আইনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এভাবে উপজেলার বহু মানুষ প্রতারিত ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের নামে ১৯৯৯ সালের মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন মোতাবেক এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।

Scroll to Top