দুই দিন পর আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় সারা দেশে নৌ চলাচলে বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ।
রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটেও ফেরি পারাপার শুরু হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন মজুমদার রোববার সকালে বলেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার থেকে নৌ চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় রোববার সকাল পৌনে ৭টা থেকে সব ধরনের নৌ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর তা স্থলভাগে উঠে এলে তার প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়।
বিরূপ আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত এবং নৌ বন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সারা দেশে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বিআইডব্লিউটিএ। আর উপকূলীয় এলাকা হাতিয়া, বেতুয়া ও রাঙ্গাবালিতে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়।
এদিকে পদ্মা উত্তাল হয়ে ওঠায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটেও সব ধরনের নৌযান পারাপার বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। ফলে দুই ঘাটে আটকা পড়ে শত শত গাড়ি। আবহাওয়ার এই বিরূপ পরিস্থিতি শনিবারও চলে। ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস থাকায় বিআইডব্লিউটিএ নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার বিকালে সারা দেশে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ করে দেয়।
সদরঘাটে বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিবহন পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর জানান, এমনিতে ঢাকা থেকে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি রুটে মোটামুটি ৬৫টি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছাড়ে। শনিবার আবওহায়া খারাপ থাকায় সদরঘাট থেকে মাত্র পাঁচটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আর বিকাল ৪টার পর সব ধরনের নৌযান চলাচল ছিল বন্ধ।
বিআইডব্লিউটিএ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের লঞ্চ ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান হুমায়ুন। এদিকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় রোববার ভোর ৬টা থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট দিয়ে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট দিয়ে পদ্মা পারাপারও শুরু হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহা ব্যবস্থাপক খন্দকার শাহ নেওয়াজ খালিদ জানান, শিমুলিয়ার ২ ও ৩ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১ নম্বর ও ভিঅইপি ফেরিঘাট মেরামতের কাজ চলছে। এদিকে দুদিন ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া ঘাটে রোববার সকালেও অন্তত ছয়শ যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে।
শাহ নেওয়াজ খালিদ বলেন, এই রুটে এখন ১৫টি ফেরি চলছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট দিয়েও যাত্রী পার করা হচ্ছে। সারা দিন ঠিকমত পারাপার চালানো গেলে বিকাল নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা করা যায়।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ সরোজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, শিমুলিয়া ঘাটে এখনও অপেক্ষা করছে শতশত যানবাহন ও হাজার হাজার যাত্রী। ঘাটে যাত্রী নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বক্ষণ কাজ করছে। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সে ব্যাপারে পুলিশ সর্তক রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১২২১ ঘণ্টা, ২২ অক্টোবর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ