র‍্যাম সাইজের ভূমিকা পিসির পারফর্মেন্সে কতটুকু?

র‍্যানডম-অ্যাকসেস মেমোরি যার সংক্ষিপ্তরূপ হলো র‍্যাম। এটা কম্পিউটার, গেমস কনসোল, স্মার্টফোন ও সার্ভারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ব্যবহার হয় হার্ডওয়্যার কোনো ডিভাইসের সিপিইউ বা প্রসেসর ও হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষিত ডাটার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে। এর মাধ্যমে কোনো ডাটায় অ্যাকসেস পাওয়া, প্রোগ্রাম চালুর মতো বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন হয়। এছাড়া র‍্যামের যে বিস্তৃত ব্যবহার রয়েছে তা সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে অনেক সময় অজানা থেকে যায়।

সব ডকুমেন্ট, ভিডিও, গেমস ও প্রোগ্রাম সাধারণত সংরক্ষিত হয় ডিভাইসের হার্ড ড্রাইভ বা এসএসডিতে। এটা সাধারণত কম্পিউটারের দীর্ঘস্থায়ী মেমোরি, যেখানে কোনো কনটেন্ট সরানোর আগ পর্যন্ত থেকে যায়। যখনই কম্পিউটারে কোনো প্রোগ্রাম চালু করা হয় তখন ডাটা হার্ড ড্রাইভ থেকে র‍্যামে যায়। তখন তা সিপিইউ প্রসেস শুরু করে। তখন প্রসেসকৃত ডাটা র‍্যামে ফিরে আসে। প্রোগ্রামটি বা পিসি বন্ধ করার আগ পর্যন্ত তা সেখানে থাকে।

র‍্যাম হচ্ছে অস্থায়ী ও পরিবর্তনশীল স্টোরেজ। এটা অনেকটা পিসির জন্য স্থাপন করা টেবিলের মতো। যত বেশি র‍্যাম তত বেশি শক্তিশালী কম্পিউটার। আমরা সাধারণত যাকে র‍্যাম বলি, তা প্রকৃতপক্ষে ডির‍্যাম বা ডাইনামিক র‍্যানডম অ্যাকসেস মেমোরি। ভির‍্যাম নামে ভিন্ন প্রকারের র‍্যামও রয়েছে, যা গ্রাফিকস কার্ডে একই ধরনের কাজ করে। তত্ত্বগতভাবে বলতে গেলে, র‍্যাম ছাড়াই কোনো কম্পিউটার চলতে পারে। হয়তো তা একটু স্লো হয়ে যাবে। কারণ সিপিইউ তখন হার্ড ড্রাইভ থেকে সরাসরি রিড করবে।

র‍্যাম কেনার ক্ষেত্রে সাইজের (৮ জিবি, ১৬ জিবি বা তার বেশি) পাশাপাশি যেসব ফিচার দেখতে হবে, তার মধ্যে আছে ডিডিআর ও ফ্রিকোয়েন্সি; যা মেগাহার্জ বা এমএইচজির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

ডিডিআর বলতে ডাবল ডাটা রেটকে বোঝানো হয়, যা এক দশক ধরে র‍্যাম পরিমাপের গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বাজারে পাওয়া বেশির ভাগ মাদারবোর্ডে ডিডিআর৪ র‍্যাম ব্যবহার হচ্ছে। যদি আপনার মাদারবোর্ডে ডিডিআর৩ র‍্যাম ব্যবহার হয় তাহলে তা ডিডিআর৪ র‍্যামে আপগ্রেড করতে হবে। ডিডিআর৩ থেকে ২০১৪ সালে বাজারে আসা ডিডিআর৪ অত্যাধুনিক ও অধিক শক্তিশালী। ডিডিআর৪-এর আরেকটি সুবিধা হলো, এটা কম ভোল্টেজে চলে। এতে ল্যাপটপ ও ফোনের মতো ডিভাইসের ব্যাটারি দীর্ঘদিন টেকে।

মাদারবোর্ড সক্ষম না হলে ডিডিআর৩-এর স্থলে ডিডিআর৪ ব্যবহার করা যায় না। বাজারে এখন ডিডিআর৫ পাওয়া যাচ্ছে, যা আরো বেশি ফ্রিকোয়েন্সি দেবে। তবে তা এখনো বাণিজ্যিকভাবে সহজলব্ধ হচ্ছে না।

র‍্যামের আকার নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। ১৬ জিবি র‍্যামেই সাধারণ কাজ চালিয়ে নেয়া সক্ষম। সিপিইউ ও জিপিইউ একই রকম হলে ৮ জিবি ও ৩২ জিবি র‍্যামের মধ্যে কোনো ফারাক থাকবে না।

২০২১ সালে শক্তিশালী র‍্যাম হিসেবে যে মডেলগুলো আলোচিত হয়েছে, এ রকম ১০টি নিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে টেকরাডার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি সাইটটির বরাতে শেষ হতে যাওয়া বছরটিতে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে যে র‍্যামগুলো শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: ১. কর্সএয়ার ভেনজেন্স এলইডি, ২. জি ডট স্কিল ট্রাইডেন্ট জি আরজিবি, ৩. কিংসটন হাইপারএক্স প্রিডেটর, ৪. কিংসটন হাইপারএক্স ফিউরি, ৫. কর্সএয়ার ডমিনেটর প্লাটিনাম আরজিবি, ৬. হাইপারএক্স ফিউরি আরজিবি ৩৭৩৩ মেগাহার্জ, ৭. জি ডট স্কিল ট্রাইডেন্ট জি আরজিবি ডিসি, ৮. অ্যাডাটা স্পেকট্রিক্স ডি৮০, ৯. জি ডট স্কিল ট্রাইডেন্টজি রয়াল এবং ১০. কর্সএয়ার ভেনজেন্স এলপিএক্স।

Scroll to Top